ঘুষের টাকাসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত থাকা উচ্চমান সহকারি নাসির উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছিল ডিবি পুুলিশ। সেই নাসির উদ্দিনই এখন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ঢাকা আঞ্চলিক অফিসের হিসাব রক্ষক পদে থেকে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্তি, অভিযোগ তদন্ত, সরকারি স্কুল শিক্ষকদের বদলিসহ নানা কাজ করেন। গ্রেফতারের পর বরখাস্ত ছিলেন নাসির। তিনি কীভাবে এই পদে ফিরে এলেন তা জানতে চাইলে ঢাকার আঞ্চলিক উপপরিচালক মো. আবদুল খালেক বলেন, ‘আমি মাত্র তিনমাস হলো বদলি হয়ে এখানে এসেছি। আমি এসে নাসিরকে পেয়েছি। এর বেশি কিছু জানি না।
ডিবির হাতে গ্রেফতার নাসির কীভাবে ঢাকার আঞ্চলিক অফিসে? তার মামলাগুলোর কি খবর? এসব বিষয় জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, যতদূর মনে পড়ে সাবেক মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুকের সময়ে নাসির ঢাকায় পূনর্বহাল হন।
মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘নাসিরের বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে জানাতে পারবো।’
২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২২ জানুয়ারি দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মচারী [নাসির ও মোতালেব] ও লেকহেড স্কুলের মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নানা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মোতালেব ও নাসিরকে রোববার গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। গ্রেফতারের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী নাসির ও মন্ত্রীর পিও মোতালেবের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।
জানা গেছে, শনিবার বিকালে শিক্ষামন্ত্রীর পিও মো. মোতালেব হোসেনকে রাজধানীর বসিলা এলাকা থেকে ডিবি পরিচয়ে কয়েকজন ব্যক্তি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। মোতালেব সেখানে তার নির্মাণাধীন বহুতল বাড়ির কাজ তদারক করতে গিয়েছিলেন।
রোববার রাতে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান জানান, এদিন সকাল সাড়ে ৮টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী মো. নাসির উদ্দিনকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকাসহ গুলশান এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তার সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র ধরে মোতালেব হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। অপর এক অভিযানে লেকহেড স্কুলের মালিক মো. খালেদ হাসান মতিনকে গুলশান এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোববার যুগান্তরকে বলেন, উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিন এবং মন্ত্রীর পিও মোতালেব হোসেন এমপিও, বদলি, পদোন্নতি ও নিয়োগবাণিজ্যসহ নানা সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত। তাদের সঙ্গে ক্যাডার কর্মকর্তাসহ অনেক রাঘববোয়ালও জড়িত। এ সিন্ডিকেটের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে এসব অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছিলেন। এর মাধ্যমে তারা মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেন।
কর্মকর্তারা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, যে নির্মাণাধীন ভবনের নিচ থেকে পিওকে তুলে নেয়া হয়, সেটি তার নিজের। একজন পিওর পক্ষে কীভাবে পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণ সম্ভব?
ঘোষণা: ঢাকাসহ সব আঞ্চলিক অফিসের এমপিও সিন্ডিকেট নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তায় । চোখ রাখুন।