ঢাকা শহরের মানুষ যে ডিম খায়, তাতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। ঢাকার প্রধান ছয়টি বাজারের ডিমের নমুনা বিশ্লেষণ করে ভয়াবহ এই তথ্য উঠে এসেছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়জন গবেষক যৌথভাবে গবেষণা করে এ নমুনা পেয়েছেন।
গবেষণা করতে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীর মহাখালী, মোহাম্মদপুর, সাভার, মিরপুর-১, যাত্রাবাড়ী ও কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজার থেকে ১২টি করে মোট ৭২টি ডিম সংগ্রহ করেন গবেষকরা। এই ছয় বাজারের ডিমই মূলত ঢাকা শহরে ছড়িয়ে যায়।
গবেষণায় ডিমে ১০টি ভারী ধাতুর উপস্থিতি খোঁজা হয়। কিন্তু অবাক করার বিষয়, ডিমে সবগুলো ধাতুরই উপস্থিতি পেয়েছেন গবেষকরা। এর মধ্যে ছয়টি ধাতুর উপস্থিতি সর্বোচ্চ অনুমোদিত মাত্রার (এমপিএল) মধ্যে রয়েছে। বাকি চারটি (দস্তা, তামা, সিসা ও লৌহ) ধাতুর উপস্থিতি এমপিএলের চেয়েও বেশি পাওয়া গেছে। অর্থাৎ ডিমে তামার এমপিএল ১০, সেখানে ২৪ দশমিক ৯ পর্যন্ত পাওয়া গেছে; সিসার এমপিএল ০ দশমিক ১, সেখানে ১ দশমিক ৯ পর্যন্ত পাওয়া গেছে; লোহার এমপিএল ১৭ দশমিক ৬, সেখানে ৬৪ দশমিক ৫৯ পর্যন্ত পাওয়া গেছে এবং দস্তার এমপিএল ২০, সেখানে সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ২৬ পাওয়া গেছে।
ডিমে মাত্রাতিরিক্ত ভারী ধাতু থাকায় ক্যানসার, হৃদ্রোগ, শ্বাসপ্রশ্বাসে জটিলতা, রক্তশূন্যতা, মস্তিষ্ক-কিডনি-স্নায়ুর ক্ষতিসহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়, যা প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে শিশু ও বয়স্কদের জন্য বেশি ঝুঁকি তৈরি করে।
গবেষণাটি করেছেন অধ্যাপক মো. শাহজাহান, অধ্যাপক আবদুস সামাদ, মো. মাহমুদুল হাসান, অধ্যাপক দোলন রায়, খন্দকার শাহীন আহমেদ এবং স্মিতা সরকার।