শেরপুর জেলা প্রশাসকের বাংলোয় তালা ঝুলিয়ে-কার্যালয় ঘেরাও করে দাবি আদায় করে নিয়েছে শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীরা। নির্ধারিত স্থানে কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণের দাবিতে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে প্রায় এক ঘণ্টা শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন করে বলে জানিয়েছেন কলেজের উপাধ্যক্ষ আ জ ম রেজাউল করিম খান।
পরে জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ছাত্রীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে তারা বাংলোর তালা খুলে দিয়ে কলেজে ফিরে যায়।
শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য ক্যাম্পাসের ভেতরে একটি স্থানের মাটি পরীক্ষা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ ভবন নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করলে তৎকালীন জেলা প্রশাসক তাতে বাধা দেন। এর কারণ হিসেবে জানা যায়, জায়গাটি অর্পিত সম্পত্তি হওয়ায় সেখানে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক দফা বৈঠক হলেও ভবন তৈরি করা যায়নি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৭ অক্টোবর) এক দফা দাবি জানিয়ে বর্তমান জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের কাছে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে স্মারকলিপি দেন আন্দোলনরত ছাত্রীরা।
২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার পরও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রীরা কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা প্রশাসকের বাংলোর প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে তারা অফিস কক্ষে অবস্থান নিয়ে তাৎক্ষণিক দাবি মেনে নেয়ার জন্য বিক্ষোভ করতে থাকে।
এক পর্যায়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা এসে ছাত্রীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু দাবি আদায়ে অনড় থাকেন।
ঘণ্টাখানেক পর কলেজের উপাধ্যক্ষ আ জ ম রেজাউল করিম খানসহ অন্যান্য ছাত্রীরা এসে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন। এক পর্যায়ে নির্ধারিত স্থানে এ ভবন নির্মাণে আপত্তি নেই বলে জানিয়ে কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রীদের আশ্বস্ত করেন জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান।
সেইসঙ্গে তিনি ভবন নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়িতা অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত স্থানে ভবনের কাজ শুরু করার আহ্বান জানান।
পরে জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষক-ছাত্রীরা জেলা প্রশাসকের বাংলোর তালা খুলে দিয়ে কলেজে ফিরে যায়।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “ছাত্রীদের দাবির সঙ্গে আমার দ্বিমত নেই। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে ভবন নির্মাণের জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বৃষ্টি না থাকলে বুধবার ভিত্তি প্রস্তুর নির্মাণ করা হবে। যে জায়গায় সয়েল টেস্ট হয়েছে, সেই জায়গায় ভবন হবে।”