যানজটে স্থবির রাজধানীর সড়কগুলো এখন ফাঁকা। যানের জট নেই, বেপরোয়া হর্ন বাজছে না অহরহ, বাসগুলো একটি অপরটিকে চেপে ধরছে না; করছে না ওভারটেক।
ফুটপাতে ধাক্কাধাক্কি করে ছুটে চলা মানুষের দেখা মিলছে না। বিকট শব্দে চলছে না মোটরসাইকেল।
রোববার (১৬ জুন) রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক বিজয় সারণি, ফার্মগেট, জাহাঙ্গীর গেট, বনানী সড়ক, মগবাজার, পুরানা পল্টন সড়ক ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
স্বাভাবিক সময়ে এ সড়কগুলো যানের জটে স্থবির হয়ে থাকে। গরমে মানুষ কষ্ট পায়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে থেকে বিজয় সরণি, বিজয় সরণি থেকে ফার্মগেট ও তেজগাঁয়ের সংযোগ সড়ক সামলাতে হিমসিম খান ৬-৭ জন ট্রাফিক সদস্য। এই সড়কেই আজ সারা দিন তেমন গাড়ির জটলা দেখা যাচ্ছে না। সকালেরে দিকে কিছু সংখ্যক যানবাহন দেখা গেলেও দুপুরের পর থেকে তাও কমে আসে। ট্রাফিক সদস্যরাও অলস সময় পার করছেন।
তিন দিকের যানবাহন সামলাতে জাহাঙ্গীর গেটে দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক সদস্যের জান যেখানে ওষ্ঠাগত হয়ে পড়তো, সেখানেও আজ দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ঈদের আগের দিন সেখানে কোনো ট্রাফিক পুলিশ নেই।
অফিস খোলা নেই। নেই অফিসমুখি মানুষের যাতায়াত। তাই ট্রাফিক পুলিশের সতর্ক দৃষ্টি নেই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে। পুলিশ বক্সের ভেতরে তাদের খোশ গল্প করতে দেখা গেছে। শের ই বাংলা নগরের আইডিবির মোড়ের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরাও স্বস্তিতে আছেন। কেননা, ওই সড়ক ধরে চলাচলকারী যানবাহন আইন মেনে যাতায়াত করছে।
সাধারণ কর্মদিবসে জ্যাম ছাড়া বনানীর বিমানবন্দর সড়কের কথা চিন্তাই করা যায় না। মহাখালীর চেয়ারম্যানবাড়ি থেকে সেনা ক্লাব হয়ে স্ফাফ রোডের ফ্লাইওভার পার হয়ে যানজট সাধারণত প্রগতি সরণি পর্যন্ত গড়ায়। সড়ক হয়ে যায় সর্পিল। সেই বনানী সড়কের অবস্থাও আজ অন্যরকম।
তবে মহাখালী বাস টার্মিনালের কোচ-বাস যাতায়াত সড়কের প্রাণচঞ্চল্যতা ধরে রেখেছে। ঈদের ছুটির তিন এমনই থাকবে ঢাকার সড়ক।
ঢাকার ফাঁকা সড়কে মোটরসাইকেল চালাতে পেরে অনেক খুশি তেজগাঁওয়ের বাসিন্দা আঞ্জুম অয়ন। তিনি বলেন, ঢাকাকে যেন চেনাই যাচ্ছে না। যদি এমন সারা বছর থাকতো ! ওহ খুবই সুন্দর হতো।
অবশ্য ফাঁকা সড়কে বিপদের কথাও মনে করিয়ে দিলেন মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা হাবিব সরাফত। তিনি বলেন, এমন হলে তো সবাই বাড়াবাড়ি করে মোটরসাইলে, গাড়ি চালাবে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
সাধারণ পথচারী ও জনসাধারণও বলছে, ঈদের দিনগুলোয় ঢাকার রাস্তা দেখলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। সব সময় এমন থাকলে মানুষ, দেশ ও সরকারের অনেক বেশি উন্নতি হতো। আশা করি, সরকার আমাদের এই চাহিদা পূরণ করবে।
এসব রোডের ট্রাফিক পুলিশদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, আমাদের স্বস্তির দিনগুলো হয় সাধারণত সরকারি ছুটির দিনগুলোয়। ঈদের ছুটিতেও আমরা অনেকটা নির্ভার দায়িত্ব পালন করি। ঈদের পর থেকে ফের চির চেনা ঢাকাকে দেখা যাবে।