বিসিএসআইআরের বিআরআইসিএম অডিটোরিয়ামে বিশ্বের ১১টি দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলন-২০২২’ যা আগামীকাল পর্যন্ত চলবে। এ সময়ে বিসিএসআইআরের নির্ধারিত ১২টি ভেনুতে প্রতিদিন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে কেন্দ্র করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা তাদের গবেষণার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরবেন। এসব গবেষণার তথ্য-উপাত্তের আলোকে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় গবেষণা প্রণয়নে বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ও গবেষক বিশেষ করে বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীদের অনুপ্রাণিত করবে।
যেসব দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা এ তিনদিনের বিজ্ঞান সম্মেলনে তাদের গবেষণার ফলাফল তুলে ধরবেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ওমান ও ভারত। সম্মেলনের জন্য মোট ৮৪৮টি গবেষণার সারসংক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। পরে যাচাই-বাছাই করে ৩৬০টি বিষয়ভিত্তিক প্রেজেন্টেশন ও ২০৩টি পোস্টার প্রেজেন্টেশন সম্মেলনের তিনদিনে বিভিন্ন ভেনুতে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এসব প্রেজেন্টেশন ও পোস্টার প্রেজেন্টেশন ছাড়াও ৬০টি কি-নোট পেপার ও ৬০টি ইনভাইটেড লেকচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আলোকে বাংলাদেশের করণীয় বিষয়ে থিম লেকচার প্রদান করেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ।
একই সঙ্গে প্ল্যানারি সেশনের বিশেষ ভাষণে ভারতের সিএসআইআরের ডিজি ড. নাল্লা থামবি কালাই সেলভি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা ও অসুবিধার বিভিন্ন চালচিত্র তুলে ধরেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা তৈরিতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলনে উপস্থাপিত সব গবেষণার প্রতি বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীদের বিশেষভাবে মনোযোগী হতে হবে।
বিশেষ অতিথির ভাষণে অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, এমপি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রয়োজনীয় এবং গ্রহণযোগ্য প্রযুক্তির মাধ্যমেই গবেষণার উত্কর্ষ সাধন করতে হবে অন্যথায় ভুল প্রযুক্তির ব্যবহারে দেশের এমনকি সভ্যতার মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান বিশেষ অতিথির ভাষণে উল্লেখ করেন যে বিজ্ঞান গবেষণায় উন্নতমানের যন্ত্রপাতিসহ দেশের উন্নয়নে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। সরকার বিসিএসআইআরের আধুনিক যন্ত্রপাতি ও গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেছে। সময় এখন বিজ্ঞানী ও গবেষকদের। তাদের হাত ধরেই দেশের বিজ্ঞান গবেষণা সামনে এগিয়ে যাবে।
সভাপতির ভাষণে বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ বলেন, বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অগ্রযাত্রায় নেতৃত্ব দিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, নতুন নতুন প্রযুক্তির নিজেদের মানিয়ে নিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে ২০৪১ খ্রিষ্টাব্দ নয়, মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস এমনকি ২১০০ খ্রিষ্টাব্দের ডেল্টা প্ল্যানের আলোকে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিসিএসআইআরের সদস্য ও পরিচালক, সিনিয়র বিজ্ঞানী ও তরুণ বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা।