ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের এক অধ্যাপকের কক্ষ দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে ও গান গেয়ে প্রতিবাদ জানান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, অবৈধভাবে ঢাবি অধ্যাপক ড. ইসরাফিল শাহীনের কক্ষ দখলের ফারসি বিভাগ দখল করেছে। এটা সংস্কৃতির ওপর আঘাত করা হয়েছে। এই রুম থেকেই আমাদের বিভাগের পথচলা শুরু। এই আঘাত আমাদের অস্তিত্বের ওপর আঘাত। আমাদের শিক্ষকেরা আমাদের দেবতাতূল্য। তাদের প্রতি এরকম লাঞ্ছনা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, যেই কক্ষ থেকে তালা এনে অবৈধভাবে কক্ষে তালা দেয়া হয়েছে। পুনরায় যদি আবার একইভাবে তালা ঝোলানো হয়, যেই কক্ষ হতে তালা ঝোলানো হবে, সেই কক্ষেই তালা লাগিয়ে দেবো।
থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদুল কবির বলেন, আমাদের এখনে দাঁড়ানোর কথা না, ক্লাসে থাকার কথা। আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনকে জানিয়ে এসেছি ২০ বছর ধরে একজন অধ্যাপক বিভাগের সৃষ্টি লগ্ন থেকে এই রুমে বসেন। আরেকটি বিভাগের রুম বড় করার জন্য এ রুম সিলগালা করে দেয়া হলো! এটা জ্ঞানের ওপরে আঘাত, সংস্কৃতির ওপরে আঘাত। আমরা উপাচার্যের কাছে বিচার চাই, তদন্ত করা হোক, কারা এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে?
বিভাগের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান লিয়ন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সৌন্দর্য আছে, ভদ্রতার মানদণ্ড আছে। এটা কেমন ভদ্রতা? এই ধরনের কাজ আমাদের মর্মাহত করেছে। একটি বিভাগকে সুবিধা দেয়ার জন্য আরেকটি বিভাগের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।
মানববন্ধনে সহকারী অধ্যাপক কাজী তামান্না হক সিগমা, তানভীর নাহিদ খানসহ বিভাগের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেন থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য বিষয়টি সুরাহা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
যদিও ফারসি বিভাগের পক্ষ থেকে ওই কক্ষটি তাদের বলে দাবি করা হচ্ছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, অযৌক্তিকভাবে অন্য কারো কক্ষ দখল করতে কেউ পারে না, এটি সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত একটি কাজ। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কক্ষ বিভাজন কমিটির আছে। যারা প্রাপ্যতা অনুযায়ী কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে। কমিটির সদস্যরা ডিন ও শিক্ষকদের সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করবেন।