ঢাবি অধ্যাপকের বিশেষ অনুরোধ দুই ছাত্র উপদেষ্টার কাছে

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তারা দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ দুজনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। একিভাবে তাদের কাছে শিক্ষা সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয়ে বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। 

শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকালে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ বিশেষ অনুরোধ জানান।

তিনি লেখেন, গত সরকারের সবচেয়ে বড় ভুল কি ছিল? শিক্ষা, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অবজ্ঞা, অবহেলা, অপমান করা। শুধু দেখুন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীরা কি মানবেতর জীবন যাপন করেছে আর তার ছাত্র সংগঠন দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে। লেখাপড়া করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে কিন্তু লেখাপড়ার জন্য একটি পড়ার টেবিল পায়নি, ঘুমানোর জন্য একটি বিছানা পায়নি। জোর করে মিটিং মিছিল করতে নিয়ে গেছে কারণ বড় মিছিল দেখালে সরকার খুশি হয়। একদিকে সাধারণ ছাত্ররা নির্যাতিত হয়েছে।   

তিনি আরো বলেন, অথচ ইতিহাস সাক্ষী বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই আমাদের সকল আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সকল অর্জনে এই শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। ৫২-র কথা বলুন, ৭১ এর কথা বলুন, ৯০ এর কথা বলুন, ২০০৭ এর কথা বলুন আর ২০২৪ এর কথাই বলুন। এতো অর্জন সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরাই থেকেছে সবচেয়ে অবহেলিত। 

আশা করি এইবার আর এমন হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন,  এইবার শুরুটাই দারুন হয়েছে। এইবার ১৭ জনের মধ্যে ২০২৪ এর ছাত্র-শিক্ষক জনতার আন্দোলনের  মাধ্যমে যারা নতুন স্বপ্ন অর্জন করেছে তাদের দুইজন প্রতিনিধি আছে যেটা আগে কখনো হয়নি। আমি আশা করব এরা নিজেদের কেবল দুজন  ভাববে না। এরা অসংখ্য শিক্ষার্থীর প্রতিনিধি। আশা করি শত শত শিক্ষার্থীর ত্যাগের কথা ভুলবে না। তারা কোন না কোন একটা পথ বের করবে যার মাধ্যমে গোটা ছাত্র সমাজের আকাঙ্ক্ষার কথা জানতে পারে। 

তিনি আরো বলেন, এইবার এই আন্দোলনে আরেকটি অসাধারণ ঘটনা ঘটেছে। আমাদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠেছে। যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্যাতিত হয়ে বিতাড়িত হচ্ছিল তখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলনের নতুন মোমেন্টাম ইঞ্জেক্ট করে। শুধু শিক্ষার্থীরা না। তাদের অনেক শিক্ষকও তাদের পাশে এবং অনেকেই আমরা শিক্ষক নেটওয়ার্কের ব্যানারে যেই আন্দোলন করছিলাম সেখানে এসে যোগ দিয়েছে এবং অসাধারণ বক্তব্য রেখেছে। বিশেষ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক নারী শিক্ষকদের উপস্থিতি আমাকে দারুণভাবে উদ্বেলিত করেছিল।

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ভুলবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন উপদেষ্টাদের মধ্যে দুজন শিক্ষার্থী আশা করি এইসব অবদান ভুলবে না। আশা করি তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের সেরা সেরা বিশ্ববিদ্যালয় যেমন হয় তেমন হতে জোরালো ভূমিকা রাখবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন অসভ্য কু ছাত্র কিংবা শিক্ষক রাজনীতি ঢুকতে না পারে। ছাত্ররা রাজনৈতিক সচেতন হবে। এইবার যারা আন্দোলন করেছে তারা কি কোন রাজনৈতিক দল করতো? অধিকাংশই কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী ছিল না। এই সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা দেখে আমি মুগ্ধ। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ছিল উল্লেখ করার মত। তাদের মিছিলের তেজ ছিল যা অন্যদের সংক্রামিত করেছে। 

বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, দুজন শিক্ষার্থী উপদেষ্টার কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ তারা যেন সর্বদা গার্ড দেয়। শিক্ষায় যেন বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে জোরালো ভূমিকা রাখে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেন শিক্ষার্থীরা পড়ার পরিবেশ পায়। শিক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় কষ্টের কথা এই দুইজন শিক্ষার্থী উপদেষ্টাদের চেয়ে বেশি আর কেউ জানে না। নতুন সকাল, নতুন সরকার তাই নতুন আশায় বুক বাধলাম। এই সরকার সফল মানে বাংলাদেশ সফল।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান - dainik shiksha ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ - dainik shiksha সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036020278930664