ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের ‘প্রলয় গ্যাংয়ের’ মারধরের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৩১ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হক নতুন এ দিন ধার্য করেন।
এ ঘটনায় হত্যার উদ্দেশে হামলার অভিযোগে গত ২৬ মার্চ শাহবাগ থানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রলয় গ্যাংয়ের ১০ সদস্য ও অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী ছাত্র জোবায়ের ইবনে হুমায়ুনের মা সাদিয়া আফরোজ খান। ওই মামলায় গ্যাংয়ের সদস্য সাকিব ফেরদৌস ও নাঈমুর রহমান ওরফে দুর্জয় এরই মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন।
মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ছাত্র তবারক মিয়াকে এক নম্বর আসামি করা হয়। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের সিফাত সাহিল, ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে সাকিব, মো. সোভন ও সৈয়দ নাসিফ ইমতিয়াজ ওরফে সাইদ, সূর্য সেন হলের ফারহান লাবিব, মুহসীন হলের অর্ণব খান ও আবু রায়হান, কবি জসীমউদদীন হলের নাঈমুর রহমান ওরফে দুর্জয়, সাদ, রহমান জিয়া, মোশারফ হোসেন, জহুরুল হক হলের হেদায়েত নূর, মাহিন মনোয়ার, সাদমান তাওহিদ ওরফে বর্ষণ ও আবদুল্লাহ আল আরিফ, জগন্নাথ হলের প্রত্যয় সাহা ও জয় বিশ্বাস এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ফেরদৌস আলম ওরফে ইমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জনকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২৫ মার্চ দিনগত রাতে তার ছেলে জোবায়েরকে হত্যার উদ্দেশে স্টাম্প, রড, বেল্ট ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন অভিযুক্তরা। এতে তার মাথা ও চোখে গুরুতর জখম হয় এবং ডান পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়। মারধরের সময় জোবায়েরের বন্ধুরা তাকে রক্ষা করতে গেলে তাদেরও পেটানো হয়। এমনকি প্রাণনাশের হুমকিসহ ভয়ভীতি দেখানো হয়। মারধরে জোবায়ের চেতনা হারিয়ে ফেললে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে জোবায়েরকে তার বন্ধুরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের কিছু ছাত্র মিলে প্রলয় গ্যাং তৈরি করেন। এই গ্যাং দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাস এলাকায় নানা অপকর্ম করে আসছিল। সম্প্রতি ঢাবির কবি জসীমউদ্দীন হলের মাঠ এলাকায় তাদেরই সহপাঠী জোবায়ের ইবনে হুমায়ুনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার ঘটনায় গ্যাংয়ের পরিচয় প্রকাশ্যে আসে। জোবায়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ ও স্যার এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।