দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্রের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং শহিদুল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। তবে ওই ছাত্র বলছেন, তার সঙ্গে অনিচ্ছাকৃত ধাক্কা লেগেছে। এরপরও তাকে বেধড়ক পিটুনি দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৮ জুন) রাতে স্টেশনের নিচে বাংলা একাডেমির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেছেন, রাত সোয়া ৯টার দিকে বাংলা একাডেমির বাহিরের গেটের সামনের ফুটপাত দিয়ে সুফিয়া কামাল হলের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় ওই ছাত্র ডান দিকে যাওয়ার সময় প্রথমে তাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। এরপর শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় স্পর্শ করলে চিৎকার দিলে তিনি দৌড়ে পালাতে যান। এমন সময় কয়েকজন তাকে ধরে ফেলেন। তিন নেতার মাজারের সামনে তাকে ধরে প্রক্টরিয়াল টিমকে জানানো হলে তারা এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়।
যদিও ওই ছাত্রের দাবি, মেয়েটির সঙ্গে তার ধাক্কা লেগেছিল। তিনি বলেন, আমি কাটাবন থেকে টিউশনি করে হলের দিকে দ্রুত হেঁটে যাওয়ার একপর্যায়ে মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে তার সঙ্গে আমার ধাক্কা লেগেছে। এর বাইরে ইচ্ছাকৃত কোনো বাজে উদ্দেশ্য ছিল না। এ সময় পালানোর বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ভয় পেয়ে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে আমাকে ধরে মারধর করা হয়।
এ বিষয়ে শহিদুল্লাহ হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নয়ন বলেন, সে দরিদ্র ঘরের ছেলে। বাঁধনের সঙ্গে যুক্ত আছে।পাশাপাশি সে অত্যন্ত মেধাবী ও ভীতু প্রকৃতির। সে এ ধরনের কাজ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস হয় না। তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। তার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। তাকে রাত ২টা পর্যন্ত প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি এবং আমার বন্ধু এ পাশ দিয়েই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ মেয়েটির চিৎকার শুনে তাকিয়ে দেখি, ছেলেটা দৌড়ে পালাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে আমার মনে হয়েছিল, সে কিছু একটা ছিনতাই করে পালাচ্ছে। তাই আমি এবং আমার বন্ধু তাকে ধরার জন্য দৌড় দিই এবং তিন নেতার মাজারের সামনে তাকে ধরি। সেখানে ফজলুল হক মুসলিম হলের একটা ছেলের কাছে সে আশ্রয় নিলে আমি বহিরাগত ছিনতাইকারী ভেবে তার সঙ্গে রাগান্বিত স্বরে কথা বলি।’
তিনি বলেন, ‘তাকে বাচানোর চেষ্টা করায় আশ্রয়দাতাকেও বহিরাগত ভেবে একটু রাগান্বিত হয়ে কথা বললে সে আমার মুখে এলোপাতাড়ি ঘুষি ও থাপ্পড় দেয়। এতে আমার চশমাটি ভেঙে যায় এবং আমি চোখে ব্যথা পাই। পরবর্তীতে লোকজন জমা হলে তাদেরকে ধরে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে থানায় নিয়ে আসা হয়।’
এদিকে ভুক্তভোগী ছাত্রী মামলা না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে শাস্তির জন্য রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি অভিযোগপত্র দেবেন বলে জানিয়েছেন। তার ভাষ্যমতে, ছেলেটিকে তিনি আগে কখনো দেখেনি। তার সঙ্গে ছেলেটি যা করেছে, তার সুষ্ঠু বিচার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে না পেলে পরবর্তীতে থানায় মামলা করবেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, রোববার তাদেরকে প্রক্টর অফিসে ডাকা হয়েছে। দু’জনের থেকে ঘটনা ভালোভাবে শুনে তারপর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি তাৎক্ষণিক থানায় আমার সহকারীদেরকে পাঠিয়েছি। তারা খোঁজ খবর নিয়েছে।