ঢাবি শিক্ষক জামাল উদ্দীনের প্রচারপত্রে ৩৭ বানান ভুল

ঢাবি প্রতিনিধি |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের কার্যকরী পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ ডিসেম্বর। বিগত নির্বাচনগুলোতে আওয়ামীপন্থী নীল দল ও বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাদা দল ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্যানেল ঘোষণা করলেও এবার ব্যতিক্রম।

সিনেট নির্বাচনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনে নীল দল থেকে প্রার্থী হলেও এবার প্যানেলের বাইরে গিয়ে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন। ভোট চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’সহ ভুল বানানে ভরা পরিচিতিপত্র বিতরণ করে আলোচনায় রয়েছেন তিনি।

নীল দলের একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৭ ডিসেম্বর সর্বসম্মতিক্রমে নীল দলের প্যানেল চূড়ান্ত করা হয়।  এতে শিক্ষক সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়াকে সভাপতি হিসেবে দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। অধ্যাপক জামাল দলের সিদ্ধান্ত না মেনে প্রার্থী হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন নীল দলের নীতিনির্ধারকরা। একইসঙ্গে প্রচারপত্রে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ বানান ভুল করায় ব্যথিত তারা। 

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নির্বাচন-২০২৩, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি নীল দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করুন’ শিরোনামে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে এই প্রচারপত্র বিলি করছেন অধ্যাপক জামাল উদ্দীন। এতে দেখা যায়, শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করতে গিয়ে লিখা হয়েছে, তিমি (তিনি) বরিশাল ক্যাডেট কলেজ থেকে ১২৮৫ খ্রিষ্টাব্দে মাধ্যমিক পাস করেন। যেটি হবে ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে। উত্তীর্ণ এর বদলে লেখা হয়েছে উত্তিণ। আবার একই বাক্যে ইংল্যান্ডের স্থলে লেখা হয়েছে ইং্যান্ডের এবং খ্যাতনামা এর স্থলে ক্যাতনামা লেখা হয়। এছাড়াও মেডিকেল কলেজে লিখতে গিয়ে লেখা হয়েছে মেডিটেল কলেটে।

সামাজিক বিজ্ঞান এর স্থলে সামরিক বিজ্ঞান, জাতীয়র স্থলে জাতীঢ়, প্রবন্ধর স্থলে পবন্ধ, প্রতিবেদনকে পিতিবেদন, তন্মধ্যের স্থলে তম্মধ্যে, সর্বশেষ লিখতে গিয়ে লিখেছেন সবংশেষষ, গণতন্ত্র এর স্থলে গনতন্ত্র। গণ্ডির হয়ে গেছে গন্থি, অ্যাওয়ার্ড লেখা হয়েছে আওয়ার্ড। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে লেখা হয় বঙ্গবব্ধু। মুক্তিযুদ্ধের স্থলে লেখা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধোর।

প্রার্থীতার বিষযে জানতে চাইলে অধ্যাপক জামাল উদ্দীন বলেন, আমি নীল দল থেকে নই, তবে শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়া আর সবগুলো পদে আমি নীল দলকে সমর্থন করি। আমি শুধু প্রেসিডেন্ট পদের বিরোধিতা করছি।  

বঙ্গবন্ধু-মুক্তিযুদ্ধসহ বানান ভুলের বিষয়ে তিনি বলেন, ছাপাখানায় একটি সমস্যা হয়েছিল। তারা ৩৭-৩৮টি বানান এলোমেলো করেছিল। প্রথম সংস্করণে ৭০০-৮০০ কপি ভুল হয়েছিল। পরে ঠিক করে বিলি করা হয়েছে।

এসব বিষয়ে দলের অবস্থান জানতে চাইলে নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস ছামাদ বলেন, নীল দলের প্যানেল তো একটাই। এখানে দুই প্যানেল হওয়ার সুযোগ নেই। নীল দলের সভায় এটি অনুমোদন হয়েছে।

অধ্যাপক জামাল উদ্দীন কর্তৃক প্রচারপত্রে নীল দলের উল্লেখ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি নিজের মতো করে প্রার্থী হয়েছেন। নীল দলের মনোনয়ন পত্র নেননি। তিনি নীল দলের প্রার্থী না।

ভুল বানানের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রচারপত্রে ভুল বানানে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু লিখেছেন এজন্য আমরা তীব্রভাবে প্রতিবাদ জানাই। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।  

নীল দলের সভাপতি প্রার্থী অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, নীল দল থেকে আমাকে সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। এখানে দ্বিতীয় প্রার্থীর সুযোগ নেই।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ - dainik shiksha ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত - dainik shiksha টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028200149536133