ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে একদল শিক্ষার্থী গিয়ে এই ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের দায়িত্বরত এক কর্মচারী। শিক্ষক সমিতির এই কার্যালয়টি ঢাবি ক্লাবের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অফিসে শেখ মুজিবুর রহমানের ছিড়ে ফেলা ছবি পড়ে রয়েছে। ফুল এবং অন্যান্য ছোটখাটো কিছু জিনিসপত্র এলোমেলো হয়ে রয়েছে। শিক্ষক সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের নামফলক থেকে বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া ও অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্লাবের দায়িত্বরত এক কর্মচারী বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে ১০-১২ জন শিক্ষার্থী সেখানে এসেছিল। সিসি ক্যামেরা দেখে তাদেরকে চিহ্নিত করা সম্ভব।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, বেশ কয়েকজন আমাদের অফিস ভাঙচুর করেছে। তারা আমাদেরকে গালিগালাজ করেছে, দরজায় লাথি মেরেছে। অফিসের ম্যানেজারকে মারতে পর্যন্ত গিয়েছে। এটা শিক্ষকদের অবমাননা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ৫৩ বছরের ইতিহাসে এরকম ঘটনা আর কখনো ঘটেনি। এত আন্দোলন হয়েছে তবুও এখানে কখনো কোন সমস্যা হয়নি।
তিনি বলেন, আমি আমার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বলব-এখানে তো শিক্ষকরাই থাকে। আর প্রশাসনের উচিত এর তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকা।
আজ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ খান, সহকারী প্রক্টর ড. রফিকুল ইসলামসহ আরো বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। এসময় উপাচার্য শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে কথা বলেন।
পরিদর্শন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ আমাদেরকে বলার সাথে সাথে আমরা প্রক্টরিয়াল টিম পাঠিয়েছি। আমি ছাত্রদেরকে বলতে চাই, আমাদের ছাত্র-জনতার যুক্তিসংগত কারণেই ক্ষোভ আছে। কিন্তু সেই ক্ষোভের যেন অনিয়ন্ত্রিত বহিঃপ্রকাশ না হয়। একটা পদ্ধতিগত বা আইনগতভাবেই আমাদের যেটা করার ওভাবেই আমরা করব। অনিয়ন্ত্রিতভাবে যেন বহিঃপ্রকাশ না ঘটে।
তিনি বলেন, অনিয়ন্ত্রিত বহিঃপ্রকাশ যাতে না হয় সেজন্য আমাদের উভয় পক্ষেরই সহনশীলতার প্রয়োজন আছে। আমরা খুবই নাজুক একটা সময় পার করছি। দেশ একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে। আমাদের সর্বোচ্চ বিচার বিবেচনার প্রয়োজন আছে।