ঢাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌ*ন নি*পী*ড়নের অভিযোগ ছাত্রীর

দৈনিক শিক্ষাডটকম ঢাবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ঢাবি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের এক সাবেক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অমিয় সৃজন সাম্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান, অনুষদের ডিন ও উপাচার্যের কাছে অভিযোগপত্র দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়া সত্ত্বেও ছাত্রীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন বলে অভিযোগ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী গত ৮ অক্টোবর উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. উম্মে বুশরা ফাতেহা সুলতানা বরাবর অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের কাছেও এর অনুলিপি পাঠান। অনুলিপির সঙ্গে ওই শিক্ষার্থী প্রমাণস্বরূপ কিছু ব্যক্তিগত মেসেজের স্ক্রিনশটও যুক্ত করেন।

ওই ছাত্রী তাঁর অভিযোগপত্রে লিখেন, ‘অমিয় সৃজন সাম্য আমার বিভাগের শিক্ষক হওয়ায় তিনি আমাকে ক্যারিয়ার ও উচ্চশিক্ষা বিষয়ে পরামর্শ দিতেন। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন সময়ে তার ব্যক্তিগত জীবন, একাকিত্ব, উচ্চশিক্ষা ইত্যাদি নানা বিষয়ে কথা বলতেন। ধীরে ধীরে তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক আগের চেয়ে ভালো হয়। এরপর ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে ২৫ এপ্রিল তিনি আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু, আমি আমাদের ধর্মীয় ভিন্নতার বিষয়টি সামনে এনে প্রস্তাব নাকচ করে দেই। আমি তাকে স্বাভাবিক আচরণ করতে বলা সত্ত্বেও তিনি বিভিন্ন সময় ফোন করে, ম্যাসেজ দিয়ে আমার প্রতি তাঁর দুর্বলতার কথা শেয়ার করতেন।’

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ‘একপর্যায়ে আমিও তাঁর প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে যাই। পরবর্তী সময়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে গত বছরেরই ৩ অক্টোবর আমাদের সম্পর্ক শুরু হয়। সম্পর্কের কিছুদিন পর সে আমাকে তার বাসায় আসার প্রস্তাব দেয়। আমি আসতে রাজি না হলে সে আমাকে নিশ্চিত করে যে তার বাসা সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং প্রতিশ্রুতি দেয় যে, তার দ্বারা আমার কোনো ক্ষতি হবে না। আমি তার পরও রাজি হইনি। পরবর্তীতে, তাঁর শরীর খারাপের কথা বলে আমাকে বাসায় আসতে প্রভাবিত করে। নভেম্বরের ৫ তারিখে তার বাসায় (ঢাবির স্যার পি জে হার্টজ ইন্টারন্যাশনাল হল, রুম-৫০৫) গেলে সে প্রথমদিকে স্বাভাবিক আচরণ করলেও পরবর্তীতে সে আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এই ঘটনায় আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি।’

ভুক্তভোগী ছাত্রী আরও উল্লেখ করেন, ‘তখন সে আমাকে বিয়ে করবে বলে আবারও আশ্বস্ত করে এবং প্রয়োজনে দেশের বাইরে বসবাস করবে, এমন কথাও বলে। পরবর্তীতে তাকে বিয়ের কথা বললে সে বিভিন্নভাবে কালক্ষেপণ শুরু করে এবং এই কমিটমেন্ট থেকে সরে আসতে চায়। আবার শারীরিক সম্পর্কে রাজি না হলে সে নানাভাবে ইমোশনালি ম্যানিপুলেট করে তা করতে বাধ্য করে। এভাবে সর্বশেষ, গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখেও তার বাসায় আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং ১৭ তারিখে আবারও প্রস্তাব দেয় যা আমি প্রত্যাখ্যান করি। পরবর্তীতে ২২ সেপ্টেম্বর সে আমার কাছে গোপন করে অন্য একজন মেয়েকে বিয়ে করে, যা আমি জানতে পারি ২৪ সেপ্টেম্বর। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা হলে সে আমাকে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।’

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অমিয় সৃজন সাম্যে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. উম্মে বুশরা ফাতেহা সুলতানা দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য নেওয়া যায়নি।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান জানান, এই বিষয়টি একটা ফরমাল প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। এটা আসলে একটা সেনসিটিভ ইস্যু। যেহেতু, এখানে জাস্টিসের ব্যাপার আছে, এজন্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই এটার কাজ চলছে। আর কেউ যেন এই ঘটনায় ভিকটিম না হয়, এটাতে যেন অবিচার না হয়, যেন ন্যায়বিচারটা নিশ্চিত হয়, সেই ভাবেই আসলে কাজ করা হচ্ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য - dainik shiksha ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত - dainik shiksha উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054459571838379