ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ২০ জন শিক্ষার্থী । সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মার্কেটিং বিভাগের ক্রিক্রেট খেলা চলাকালে উভয় দলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়, এক পযার্য়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী ও প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিম সেখানে হাজির হয়ে ঘটনা নিয়ন্ত্রণ আনেন এবং আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, টুর্নামেন্টে প্রথমে ব্যাট করতে নামে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট। তারা ১৯ ওভার ৩ বলে ১০ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান সংগ্রহ করে। অন্যদিকে মার্কেটিং বিভাগ ৯ ওভার ২ বলে ১ উইকেট হারিয়ে ৭২ সংগ্রহ করার পরপরই মার্কেটিং বিভাগের একজন আউট হওয়ার পরে মাঠ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানালে এই ইস্যুটিকে কেন্দ্র করে একদল আরেকদলকে কটাক্ষ করে বিভিন্ন কথা বলতে শুরু করে। তর্কের একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে উপস্থিত শিক্ষকরা খেলা স্থগিত করে দেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব শান্ত, মামুন রেজা, জীম নাজমুল, মিনহাজুল ইসলাম ফাহিম, চতুর্থ বর্ষের নাঈম হাসান অয়ন, কৃপা দাস, ফারহান মুরসালিন অলিভ, জামিল হোসেন জীম, তৃতীয় বর্ষের মশিউর রহমান মুন্না, রিশাদ সরকার, এনামুল হক পলাশ, অয়ন সমাদ্দার, মাশফিউর রহমান, দ্বিতীয় বর্ষের তপন, প্রথম বর্ষের মেহেদী হাসান ও রেদোয়ান আহত হন।
এদিকে মার্কেটিং বিভাগের আহত হন ২৭ তম ব্যচের মো. দেলোয়ার হোসাইন, জুলফিকার মাহমুদ মুন্না, ইমতিয়াজ হোসাইন এবং ২৬ তম ব্যচের আরাফ মাহমুদ।
সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম আজম বলেন, আমি খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। আহতদের মধ্যে কারো কপাল ফেটেছে, কারো হাত ফাটছে, কারো বা নাক ফেটেছে এবং নানা সমস্যা হয়েছে। যাদের অবস্থা গুরুতর তাদেরকে ঢাবি মেডিকেল সেন্টারে রেখে এসেছি। আর বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে।
মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক ড. মো.নাজমুল হোসেন বলেন, 'আমি খেলার মাঠে ছিলাম না, তবে সহকর্মীদের কাছ থেকে শুনেছি। এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমাদের কাম্য নয়।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, খেলাধুলা আমাদের শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রম। আজকে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল। আমি আহতদের দেখেছি, তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি; ঘটনাস্থলেও গিয়েছি। এরকম ঘটনা আমরা কখনোই প্রত্যাশা রাখি না।'
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, খেলার মাঠ হলো সম্প্রীতির, বন্ধুত্বের। এরকম আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ব্যাপারে নিঃসন্দেহে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।