ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কার্জন হলের পার্শ্ববর্তী পুকুর পাড়ে এক ছাত্রীসহ সহপাঠী মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে গত রোববার ঢাবি প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।
ওই ছাত্রী ঢাবির উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বন্ধুও বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আর শহীদুল্লাহ হলের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের একদল ছাত্রলীগ কর্মী এ ঘটনায় জড়িত বলে জানান তিনি।
লিখিত অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী ফলিত গণিত বিভাগের মমিন ও আসিফ, ফার্মেসি বিভাগের শ্রাবণ, ভূতত্ত্ব বিভাগের সজীব এ ঘটনায় জড়িত বলে উল্লেখ করেছেন। এরা প্রত্যেকেই ২০২২-২৩ সেশনের শহীদুল্লাহ হলের ছাত্র। গণিত বিভাগের খাদেমুল ইসলাম, ফলিত গণিত বিভাগের সিয়ামসহ ২০২১-২২ সেশনের আরো অনেকে ছিলেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, গত ৩১ মে আমি এবং আমার বন্ধু সেখানে পড়ালেখা নিয়ে কথা বলছিলাম। আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ১২-১৩ জন শিক্ষার্থী এসে আমাদের পরিচয় জানতে চাইলে আমরা পরিচয় দেই। তখন তারা স্থান ত্যাগ করতে বললে আমরা স্থান ত্যাগ করা সময় তারা আমাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে। সেটার প্রতিবাদ করলে তারা সবাই মিলে আমার সহপাঠীকে বেধরক মারধর করে।
এ সময় পাশে থাকা সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সিনিয়র একজন শিক্ষার্থী তালহা জুবায়ের তাদেরকে থামিয়ে চলে যেতে বলে। পড়ে আবার আমরা স্থান ত্যাগ করার সময় ৪-৫ জন এসে আবার আমার সহপাঠীকে মারতে শুরু করেন। এ সময় আমি তাদেরকে থামাতে গেলে তারা আমাকেও মারধর করে। এতে আমার চশমা ভেঙে যায় এবং আমি শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হই। এরপর তারা শহীদুল্লাহ হল এলাকায় ঢুকে পড়েন।
ফজলুল হক মুসলিম হলের নিরাপত্তাকর্মী ইব্রাহিম ঘটনা সত্য বলে জানান। তিনি বলেন, গত ২ দিন আগে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিলো। তবে পরে এ বিষয়ে আর কিছু জানা যায়নি।
এদিকে ঘটনা সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন অভিযুক্ত খাদেমুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি পরে জানতে পেরেছি। আমি তখন রিডিং রুমে পড়ছিলাম। এখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
তবে খাদেম কার্জন হলে যুগলদেরকে ধরে মোবাইল টাকা পয়সা হাতিয়ে নেন এমন অভিযোগ রয়েছে। তিনি গত বছরের নভেম্বরে বহিরাগত এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে টাকা-পয়সা রেখে দেন এমন অভিযোগও জানিয়েছন এক শিক্ষার্থী।
এদিকে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দিলেও গণমাধ্যমকে কিছু বলতে চাননি ভুক্তভোগী ছাত্রী। তিনি বলেন, প্রক্টর অফিস যে বিচার করবে আমি সেটিই মেনে নেবো। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমানকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।