ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় গাড়ি এক্সিডেন্টের জের ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত ছেলে ও বাবাকে পিটিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
গত মঙ্গলবার রাত নয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদুল্লাহ হলের মূল ফটকের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর শাহবাগ থানায় অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী সেলিম মোল্লা।
অভিযুক্তরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক নাজমুল হাসান রুপু, ফজলুল হক শাখা ছাত্রলীগের কর্মী মো. তারেক। এছাড়া অভিযোগপত্রে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্তরা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল করিম শয়নের অনুসারী হিসেবে পরিচিত বলে জানা গেছে।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী বলেন, মঙ্গলবার রাতে আমি ও আমার স্ত্রী খাদিজা আক্তার এবং ছেলে ক্যানসারের রোগী রুবায়েত হাসান সায়েমসহ আমার প্রাইভেটকারে করে নিজ বাড়িতে ফিরছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্ল্যাহ হলের সামনে পৌঁছালে আমি গাড়িটি ব্রেক ফেইল করে। পরে গাড়িটির গতি কমিয়ে রাস্তার পার্শ্বে আইল্যান্ডে ধাক্কা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করি। তখন শহীদুল্ল্যাহ হলের একদল শিক্ষার্থী প্রাইভেটকারটি সহ আমদের আটক করে। আমাকে ও আমার স্ত্রী সন্তানদের গাড়ি থেকে নামিয়ে রড দিয়ে আঘাত করে এবং কিল ঘুষি মেরে মারাত্মক জখম করে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ঢাবি ছাত্রলীগের উপ-মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক নাজমুল হাসান রুপু তার শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেন। তারেক হেলমেট দিয়ে আমার মাথায় সজোরে আঘাত করে জখম করে। তারা আমার কাছ থেকে মোট ৩২ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এমনকি এই বিষয়ে মামলা করলে আমাকে হত্যার হুমকিও দেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নাজমুল হাসান রুপু দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা কেনো টাকা ছিনতাই করতে যাব। তার গাড়ি দুটি রিক্সাকে মেরে দেয়। রিক্সাতে থাকা যাত্রীদের মধ্যে একজনের মাথা ফেটে যায়। দুটি রিক্সা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় তারা চলে যেতে চাইলে হলের ছোট ভাইয়েরা তাদেরকে মারধর করে। পরে আহত ব্যক্তিকে আমরা মেডিকেলে নেই। মীমাংসা করে জরিমানা নিয়ে দিয়েছি। এখন শুনছি আমাদের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। এভাবে হলে তো মানুষের উপকারও করা যাবে না।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল করিম শয়ন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নাজমুল হাসান রুপুকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। অনেকেই ছবি তুলে আমার সঙ্গে। তাই বলে প্রত্যেকেই আমার অনুসারী না। যারা এসব চুরি-ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসনকে বলবো যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
শাহবাগ থানার ওসি (তদন্ত) মাহফুজুর রহমান ভুঁইয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারা যেই হোক না কেনো আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলার পর আমরা এ ঘটনায় মামলা নেবো।