ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘বিশ্বায়নের যুগে বিদেশি ভাষা ও বিদেশ বিদ্যা অধ্যয়নের গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. এ বি এম রেজাউল করিম ফকির।
এসময় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ বলেন, দিনকে-দিন বিদেশি ভাষার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান সময়ে বিদেশি ভাষাকে একটি ডিসিপ্লিনের মধ্যে আনা যেতে পারে। যেহেতু জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হচ্ছে, এটি কিন্তু সরকারের সামর্থ্যের পরিচয়। চীন, জাপান, মস্কোতে বিদেশি ভাষা কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, আমাদের দেশেও এমন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।
অনুষ্ঠানে দার্শনিক বারট্রান্ড রাসেল প্রসঙ্গ টেনে এনে অধ্যাপক শিশির ভট্টাচার্য্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভাষা ছাড়া আর কিছু পড়ার দরকার নেই, বাকিগুলো এমনি পড়া যায়।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১০০ বছর পর আমাদের আয়ারল্যান্ডের লোকদের মতো দেশের বাইরে যেতে হবে এবং বাইরে যেতে হলে অবশ্যই ভাষা জানতে হবে। কেউ চান বা না চান বাংলাদেশ আগামী ১০-২০ বছর গুরুত্বপূর্ণ দেশ হবেই এবং আমরা উন্নতি করবোই। ইংরেজি, জার্মান, ফরাসিরা কিন্তু একটা উন্নত অবস্থান যাওয়ার পর পৃথিবী জুড়ে ভাষা শেখার জন্য নানা ইনস্টিটিউট গড়ে তুলেছিলেন। আমরা যদি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হওয়ার পর পৃথিবীর বিভিন্ন বড় বড় দেশে যদি বাংলা ভাষা শেখানোর জন্য ‘বাংলাদেশ ভবন’ তৈরি না করি তাহলে এর ভুলে মাশুল বাঙালি পরবর্তী ১০০ বছর দেবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্ক স্থাপন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলা ভাষার বিস্তার ঘটাতে হবে। বিশ্বায়নের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তিগত ভাষাতেও দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ঢাবি উপাচার্য বলেন, বিশ্ব দরবারে প্রবেশ ও জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে বিভিন্ন দিক বিবেচনায় এনে প্রমিত বাংলার চর্চার পাশাপাশি একাধিক বিদেশি ভাষা শিখতে হবে। যা একজন শিক্ষার্থীর জীবন ও জীবিকার মানকে পরিবর্তন করবে।
আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. শায়লা সুলতানার সভাপতিত্বে ও সহযোগী অধ্যাপক বিপুল চন্দ্র দেবনাথের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনছারুল আলম। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আবসার কামাল, অধ্যাপক বাহাউদ্দীন, সহযোগী অধ্যাপক আফজাল হোসাইন, সহযোগী অধ্যাপক রূপা চক্রবর্তী, সহকারী অধ্যাপক রফিক-উম মুনির চৌধুরীসহ অনেকে।