ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিস বিভাগে নারী সহপাঠীদের হাতে এক ছাত্র বুলিং, হেনস্তা ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্র বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি বলে দাবি করেছেন।
ওই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সকালে পরীক্ষা বর্জন করে বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ছাত্ররা। এসময় তারা বিভাগের ছাত্রীদের হাতে বুলিং ও হেনস্তার বিচার দাবি করেন। বিভাগটিতে ছাত্রীদের বুলিংয়ের এ ঘটনা নিয়মিত বলে অভিযোগ করেন ছাত্ররা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এসে বিচারের আশ্বাস দিলে তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সবাই বিভাগটির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বুলিংয়ের শিকার ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমাদের বিভাগে ছাত্রের তুলনায় ছাত্রী বেশি। ছাত্রীদের ‘অভিজাত’ একটি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন নুজহাত মেহজাবিন। তারা সবসময় মফস্বল থেকে আসা শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করেন। আমি এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করি বলে আমার নামে যা নয় তাই অভিযোগ করে অপদস্থ করার চেষ্টা করছেন তারা। তাদের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যও থেমে নেই।
ইমরান অভিযোগ করে আরো বলেন, তারা আমাদেরকে (ছেলেদের) সেক্সুয়াল হ্যারাজার বলে বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়াচ্ছেন। বিভাগের সিনিয়র-জুনিয়র সবার সামনে তারা এ ধরনের কথা বলছেন। কিছু দিন আগে আমরা ৬০ জন মিলে একটা ভ্রমণে গিয়েছিলাম। সেটাকে তারা সেক্সুয়াল হ্যারাজারদের ট্যুর বলে ছড়িয়েছেন। এসব বিষয়ে আমরা চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দিলেও তিনি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেননি। ফলে আমাদের আন্দোলনে নামতে হয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভাগের শিক্ষার্থী উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক অমিও সৃজন সাম্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, শিক্ষার্থীদের হেনস্তার সঙ্গে তিনিও জড়িত। তিনি একটা গ্রুপের কথা শুনে আমাদের ওপর চড়াও হন এবং সে সময় তিনি একজন ছাত্রকে পরবর্তী টার্গেট বলে আখ্যায়িত করেন। আমরা আমাদের নিরাপত্তা চাই।
তবে অভিযোগের বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক অমিও সৃজন সাম্যের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা আখ্যায়িত করে নুজহাত মেহজাবিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এই ঘটনা সম্পূর্ণ ভুল বোঝাবুঝি। তাদের অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই।
ইউমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক উম্মে বুশরা ফাতেহা সুলতানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দুই দিন আগে কয়েকজন শিক্ষার্থী একটা অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন। সেখানে শুধু একটা মেয়ের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আনা হয়। আমরা মেয়েটার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, মেয়েটা ভুলে একটা মেসেজ এক গ্রুপে দিতে গিয়ে অন্য গ্রুপে দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম মাকসুদুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা একটা অভিযোগপত্র পেয়েছি। বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে বসে আলোচনার মাধ্যমে শিগগিরই বিষয়টি সমাধান করবো।