ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী নারী জাগরণের অগ্রদূত লীলাবতী নাগের বাড়ি উদ্ধার ও সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় লেখক-গবেষকরা। ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি সংরক্ষণ করে সেখানে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাবা গিরিশ চন্দ্র নাগের নির্মিত লোহার খুঁটি, ইটের দেয়াল ও টালির ছাদের ঘরটির আর অস্তিত্ব নেই। সংস্কারের অভাবে ভেঙে শেষ হয়ে গেছে। বাড়িতে একটি রেইনট্রি গাছ আছে। সেটিও অনেক পুরনো। বাড়ির পশ্চিম ভিটায় একটি আধাপাকা টিনের ঘর। দুই দফায় ঘরটি নির্মাণ করেছেন বাড়িতে বসবাসকারী পরিবারটি। তবে বার বার চেষ্টা করেও বাড়ির বসবাসকারীদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
পাশের বাড়ির গৌড়িপদ মালাকার বলেন, ১৯৬৫ সাল থেকে তারা এ বাড়িতে বসবাস করছেন। আলাউদ্দিন চৌধুরী বাড়িটি জেলা প্রশাসন থেকে ৪৫ বছরের জন্য লিজ নিয়েছিলেন। এর আগে বাড়িটি ছিল ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়। এরপর আবারও লিজের জন্য ২০১৫ সালে আবেদন করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্থায়ী লিজের জন্য হাইকোর্টে একটি মামলাও করেছেন। আমরা বাড়িটি উদ্ধারের দাবি জানাই।
লেখক গবেষক দীপঙ্কর মোহান্তের বলেন, লীলা নাগ অনেকবার এ বাড়িতে এসেছেন। নারী শিক্ষার প্রসারে এ অঞ্চলে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তার পৈতৃক বাড়িটি সংরক্ষণ করা দরকার। বাড়িটিতে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করে ঐতিহ্য হিসেবে বাড়ির পুরনো ঘরটি সংরক্ষণ করা জরুরি।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
স্থানীয় লীলা নাগ স্মৃতি পরিষদের সদস্য অধ্যাপক তোফায়েল আহমদ বলেন, লীলা নাগ পাঁচগাঁওয়ের অহংকার। তাকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করতে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। বাড়িটি উদ্ধার করে নারী জাগরণের এই অগ্রদূতের নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দাবি জানাই।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিয়াংকা পাল বলেন, আমরা চেষ্টা করছি এ বাড়িটি কিভাবে উদ্ধার করা যায়। আশা করি দুয়েক মাসের মধ্যে একটা সমাধান আসবে। অনেক আগে বাড়িটি একজন লিজ নিয়েছিলেন। তিনি কয়েকবার নিম্ন আদালতে হেরে গিয়ে আপিল করেছেন।
লীলাবতী নাগ ১৯০০ সালের ২ অক্টোবর জন্মলাভ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা কলকাতার ব্রাহ্ম স্কুলে। এরপর ঢাকার ইডেন গার্লস স্কুলে মাধ্যমিক এবং কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে বিএ (সম্মান) সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯২১ সালে ভর্তি হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী।