ঢাবির প্রথম বর্ষের ছাত্ররা বিজয় একাত্তর হলে বৈধ সিট পেলেন

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে এই প্রথমবার ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পরেই বৈধ সিট বরাদ্দ পেয়েছেন ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তারা।  

গত বৃহস্পতিবার রাতে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক স ম আলী রেজা স্বাক্ষরিত নোটিশে সিট বরাদ্দকৃত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকায় শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২২৭ জনকে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সিট বরাদ্দের অনুভূতি জানতে চাইলে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জিন্নাহ মণ্ডল বলেন, একটা সিটের জন্য গেস্টরুমে নির্যাতন- ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে যেতে হত দিনের পর দিন। পরীক্ষা থাকলেও কর্মসূচিতে অংশ নিতেই হত। আমাদের ব্যাচ ভাগ্যবান; আমরা সেই অনাচার, অন্যায়ের শিকার হইনি।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র এমাদ উদ্দিন বলেন, গণরুমে ঠাসাঠাসি করে থাকার কথা সিনিয়রদের কাছে শুনেছি। ছোট্ট কক্ষে অনেক শিক্ষার্থীর একত্রে থাকার কষ্ট, পড়াশোনার পরিবেশ না থাকা; রাতভর গেস্টরুমে নির্যাতনের কারণে অনেকে অবর্ণনীয় কষ্টের শিকার হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার সৌভাগ্য যে আমি এসব কঠিন অভিজ্ঞতার শিকার হইনি। আমি দ্রুত একটি বৈধ সিট পেয়েছি। এটি আমার জন্য সত্যিই এক ধরনের স্বস্তি ও কৃতজ্ঞতার অনুভূতি এনে দিয়েছে। আমি যখন হলে উঠি, তখন আমার সহপাঠী ও সিনিয়রদের মধ্যে বন্ধুসুলভ মনোভাব পেয়েছি।

টেলিভিশন ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রাজেকুজ্জামান জুয়েল বলেন, প্রথম বর্ষে সিট পাওয়া গত ছয়মাস আগেও আমাদের কাছে ছিল স্বপ্নের মতো; গণরুমের অমানবিক দিনগুলো-ই ছিল স্বাভাবিক। অবশ্য এই সুন্দর বাস্তবতার জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আমাদের, রক্ত দিতে হয়েছে অনেককে। ভবিষ্যতেও যেন প্রথম বর্ষে সিট বরাদ্দের নিশ্চয়তা বজায় থাকে সেই প্রত্যাশা রইল।

গণরুমে মানবেতর জীবনযাপনের স্মৃতির কথা জানিয়ে হলের স্নাতকোত্তরের ছাত্র আব্দুর রহমান শিবলী বলেন, প্রথম বর্ষে ক্যাম্পাসে আসলেই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা গণরুমে রেখে প্রোগ্রাম করতে বাধ্য করেছে। প্রোগ্রাম না করলে গেস্টরুমে চলত নির্যাতন। অনেক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে; হল ছাড়তে হয়েছে অনেককে। এটা অকল্পনীয় ছিল প্রথম বর্ষে সিট পাওয়া; বহু ত্যাগের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশে এটা সম্ভব হয়েছে।  

জানতে চাইলে বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ স ম আলী রেজা বলেন, হল প্রশাসন হলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে এজন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। হলে এখন বহিরাগত শিক্ষার্থী নেই।

তিনি বলেন, প্রভোস্ট হিসেবে আমি এর ক্রেডিট নিতে চাই না; আমরা শুধু ফ্যাসিলিটেট করেছি। শিক্ষার্থীরাই এটি চেয়েছে-যার কারণে সম্ভব হয়েছে। শিক্ষার্থীরা চাইলে এটি অব্যাহত রাখা কঠিন কিছু না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান - dainik shiksha ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ - dainik shiksha সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031158924102783