ঢাবির মুহসীন হলে আটকে রাখা দুই ব্যক্তিকে উদ্ধার

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল থেকে দুই অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের হাতিরঝিল এলাকার নিজ বাসা থেকে তুলে এনে ঢাবি হলে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পক্ষের। পাওনা টাকা ফেরত না পাওয়ায় এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অপহরণের মূলহোতাসহ ঢাবির তিন শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

উদ্ধার হওয়া দুই ব্যক্তির নাম মো. আব্দুল জলিল ও হেফাজ উদ্দীন। 

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে মুহসীন হল প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় শাহবাগ থানা পুলিশ হলটির ৫৪৪ নম্বর কক্ষ থেকে তাদের উদ্ধার করে কক্ষটি সিলগালা করে দেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জলিলের পরিবার হাতিরঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে জানা গেছে।

ঢাবির তিন শিক্ষার্থী হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল হাসান সাঈদি, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের প্রচার উপসম্পাদক মুনতাসির হোসাইন এবং মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও মুহসীন হল ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ উপসম্পাদক আল শাহরিয়ার মাহমুদ তানসেন।

জানা গেছে, অপহরণের মূলহোতা শাহাবুদ্দিন অভিযুক্ত ঢাবি শিক্ষার্থী মুনতাসিরের আত্মীয় এবং অপহরণের শিকার জলিল ও হেফাজ উদ্দীন দুজন বন্ধু।

এ ছাড়া অভিযোগ উঠেছে, ঘটনায় অভিযুক্তরা সকলের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশাখালী উপজেলায়। বাঁশখালী উপজেলার ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদের নির্দেশে তারা এই কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে। অভিযানের পর তাকেও মুহসীন হলে দেখা গেছে অভিযুক্তদের পক্ষে কথা বলতে।

এ প্রসঙ্গে ফয়সাল মাহমুদ বলেন, আমি চট্টগ্রামে ছিলাম, গতকাল ঢাকায় এসেছি। গতরাতে আমার বাঁশখালী উপজেলার এক ছোট ভাই কল দিয়েছে যে, সে বিপদে পড়েছে একটা। সে এলাকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই। সে জন্য মুহসীন হলে গিয়েছিলাম। আমি ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই।

সূত্রে জানা গেছে, শাহাবুদ্দিন ভুক্তভোগী জলিলের কাছে ৩৫ লাখ টাকা পান। জলিল ব্যবসা করতে তার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পর তা ফেরত চাইলে সময়মতো না দিয়ে কালক্ষেপণ করায় শাহাবুদ্দিন ঢাবির কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাসহ ১০ থেকে ১৫ জনকে নিয়ে জলিল ও হেফাজকে হাতিরঝিলের হাজীপাড়া নামক এলাকায় তাদের নিজ বাসা থেকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে তুলে আনা হয়। প্রথমে ঢাবির বিজয় একাত্তর হলের একটি কক্ষে এবং পরে তাদের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৫৪৪ নম্বর কক্ষে নিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শাহবাগ থানার এসআই আল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, নির্যাতনের আলামত হিসেবে পুলিশ ওই কক্ষ থেকে একটি লোহার রড উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া, ভুক্তভোগীদের শরীরের বিভিন্নস্থানে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে।

ভুক্তভোগী আব্দুল জলিল বলেন, শাহাবুদ্দিন আমার কাছে ৩৫ লাখ টাকা পান। কিন্তু, মাঝখানে ওনার সাথে আমার যোগাযোগ গ্যাপ হয়ে যায়। এতে ভুল বোঝাবুঝির একপর্যায়ে আমাকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ২টায় বাসা থেকে তারা ১০ থেকে ১৫ জন মিলে তুলে আনেন। পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আটকে রাখেন। প্রথমে বিজয় একাত্তর হলে এবং পরে মুহসীন হলে আটকে রাখেন। গত তিনদিন ধরে আমাকে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে।

এদিকে, বক্তব্য জানতে অভিযুক্তদেরকে কল দিয়ে কাউকেই পাওয়া যায়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, মুহসীন হলে আমাদের কয়েকজন ছাত্রের সহযোগিতায় একজনকে তুলে আনা এবং টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে মারধর করার সংবাদের পর শাহবাগ থানা ও হল প্রশাসনের সহযোগিতায় দুজনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের দুই পক্ষের সাথেই কথা বলার পর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. আওলাদ হোসেন বলেন, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত অপারেশন চলমান আছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026850700378418