ঢাবির হলগুলোতে ক্যান্টিন চালুর দাবি

ঢাবি প্রতিনিধি |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলোতে টিএসসি বা ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ার মত প্রশাসনের উদ্যোগে ক্যান্টিন চালুর দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে শ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে 'খাবারের দাম কমাও! হলে খাবারের মানবৃদ্ধির দাবিতে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ ব্যানারে মানববন্ধনে এই দাবি করা হয়। 

বক্তারা বলেন, খাবারের দাম বাড়ায় বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা রুটি, কলা খেয়ে সাহরি করে। কেউ আবার ক্লাস ফেলে বাড়িতে চলে গেছে শুধু হলে ক্যান্টিনে খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায়। আমরা দেখতে পাই টিএসসি বা ক্যাফেটেরিয়ায় তো কেউ ফ্রি খাচ্ছে না কিন্তু হলে কেন খাচ্ছে! প্রশাসন তাহলে কি করছে হলগুলোতে? হলগুলো ইজারা দিয়ে ব্যবসা করা হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা কি খাচ্ছে বা না খাচ্ছে সেদিকে তাদের নজর নেই। এদিকে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ফ্রি-তে খাচ্ছে। আবার অধিক মুনাফার লোভে ইজারাদাররা খাবারের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি করছে। তাই হলের ক্যান্টিন নিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে সেগুলোকে প্রশাসনের আওতায় এনে শিক্ষার্থীদের অনুকূলে নিয়ে আসা হোক।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আহমেদ জিফ বলেন, রোজার আগের যেই খাবারের দাম ছিলো ৩০-৪০ টাকা যা বর্তমানে ৭০-৮০ টাকা করা হয়েছে, আমাদের জন্য যেটা সামর্থ্যের ঊর্ধ্বে। আবার এদিকে ক্যান্টিনের দাম বাড়ানোর কারণটাও অযৌক্তিক।

তারা বলছে সবকিছুর দাম বেড়েছে। তাহলে দাম যদি বেড়েই থাকে, রাতের খাবার ৫০ টাকায় দিতে পারলে সাহরিতে কেন সেটা ৮০ টাকা হবে? প্রশাসন কেন তাদের ভর্তুকি দিচ্ছে না, এটা প্রশাসনের দায়ভার নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা ভালো মানের খাবার খেতে পারে, তারা দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে এসেছে পড়াশোনার জন্য, খাবারের দাম ও মান নিয়ে আন্দোলন করার জন্য নয়। এসব দেখভাল করা হল প্রশাসনের কাজ। একটা চিন্মবিত্ত পরিবারের মানুষ যতটা ক্যালরির খাবার পায়, সে পরিমাণ খাবারও পায় না ঢাবির হলের শিক্ষার্থীরা।

এজন্যই আইরিশ শ্রমিক নেতা বলেছিলেন, আমরা মানুষকে উচ্চ পর্যায়ে দেখতে পারি কারণ আমরা হাঁটু গেড়ে বসে আছি। এজন্যই আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে, অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে মাঠে সক্রিয় আন্দোলনের মাধ্যমে অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। 

শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব হোসেন বলেন, কেবল অল্প কয়েকদিনের মধ্যে দ্রব্যমূল্যের যে দাম বেড়েছে তা সামাল দিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। কিন্তু হলগুলোতে এসবের ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিবেচনায় দাম কমানোর প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু আজ তারা তিনবেলা দাম দিতেই হিমশিম খাচ্ছে। অনেকে এই সমস্যার শিকার হয়ে বাড়িতে চলে গেছে।

কেবল রমজানকে পুঁজি করে খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে যা একেবারেই অমানবিক। প্রশাসন সবকিছু জেনে বুঝে চুপ থাকছে। প্রশাসন কেন আছে! তাদের কাজই হলো শিক্ষার্থীদের ভালো মন্দ বিবেচনা করে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। কিন্তু তারা কাজ করছে না। 

আমাদেরকে উন্নয়নের কথা বলে আইওয়াশ করা হচ্ছে। অথচ দেশের মেধাবীদের একাংশ তিনবেলা পুষ্টিকর খাবারই পাচ্ছে না। তাহলে এই অবকাঠামোর উন্নয়ন দিয়ে মানুষ কি করবে! আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। মানুষের অজ্ঞানতাই সরকারের মূল শক্তি। আমরা অজ্ঞান আছি বলেই প্রশাসন চুপ রয়েছে। আমরা রাজপথে নামলেই প্রশাসন চোখ খুলবে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করবে। যেখানে প্রশাসন বৈধ সিট দিতেই ৩ বছর লাগিয়ে দিচ্ছে সেখানে খাবারের লাগাম টানার আশা করা বিলাসিতা বলেও মনে করেন তিনি। এজন্য তিনি সবাইকে অধিকার আদায়ে আমাদের সোচ্চার হবার আহবান জানান।

দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী উম্মে ফাতেমা বলেন, ঢাবির মোট বাজেটের প্রায় ৮০ শতাংশ খরচ হয় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতেই৷ যেহেতু হল প্রশাসন, হাউজ টিউটর রাখা হয়েছে শিক্ষার্থীদের সার্বিক দেখভালের জন্য কিন্তু  তারা তো কোন কাজ করছে না। সব কাজ করছে ছাত্রলীগের নেতারা।  

তাহলে হলের প্রাধ্যাক্ষের ভূমিকা কোথায়? যেখানে তাদের কোন হস্তক্ষেপও নেই। তাহলে একটা কাজ করা উচিত, হলের প্রাধ্যক্ষ বা হাউস টিউটরদের বাদ দিয়ে তাদের ভাতা অফ করে দিয়ে এই টাকা শিক্ষার্থীদের খাবারে ভর্তুকি দেয়া হোক। শিক্ষার্থীদের পেছনে বা গবেষণা খাতে কোন খরচই হচ্ছে না। 

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা খাবারের দাম কমানোর দাবিতে, ক্যান্টিনগুলোকে প্রশাসনের আওতায় আনার দাবিতে বক্তব্য প্রদান করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.005612850189209