ঢাবিসহ ৫ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত সোনিয়ার

দৈনিক শিক্ষাডটকম, চুয়াডাঙ্গা |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশসেরা পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সোনিয়া আফরিন। আর্থিক অনটন নিত্যসঙ্গী হওয়ায় সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ওই মেধাবীর। এ অবস্থায় সমাজের বিত্তবানদের মুখাপেক্ষী হয়ে আছে সোনিয়ার পুরো পরিবার।

সোনিয়া আফরিন সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিয়নের কুশোডাঙ্গা গ্রামের ছানোয়ার হোসেনের ছোট মেয়ে। 

স্থানীয়রা জানান, সোনিয়ার বাবা পেশায় দিনমজুর। অন্যের জমিতে কাজ করে যা আয় করেন তা দিয়েই কোনোরকমে চলে ৬ সদস্যর পরিবার। তাদের ৩ শতক ভিটাবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নাই। ছোট বেলা থেকেই নিজের ইচ্ছাশক্তি আর শুভাকাঙ্ক্ষীদের উৎসাহে জীবনের প্রতিটি পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন সোনিয়া। দরিদ্র বাবার অর্থকষ্টে পরিবারে নিজের পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করেছেন তিনি।

২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ডিঙ্গদহ সোহরাওয়ার্দী স্মরণী বিদ্যাপীঠ থেকে এসএসসিতে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ এবং ২০২৩ সাল চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্যের সঙ্গে। এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ৩৬৬, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়র ‘বি’ ইউনিট ৪১১ ও ‘সি’ ইউনিট ৪৩৫, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ‘এ’ ইউনিট ৭৭৩ ‘বি’ ইউনিট ৬২, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ‘বি’ ইউনিট ৮৯তম স্থান অধিকার করেছেন।

এ ছাড়াও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল (বিইউপি) সমাজ বিজ্ঞান ও আইন বিভাগে ভর্তিরও সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু পরিবার টাকা যোগাড় করতে না পারায় ভর্তি হতে পারছেন না সোনিয়া। 

সোনিয়া বরাবরই মেধাবী। এজন্য তার বিদ্যালয়, কলেজ ও কোচিং শিক্ষকরা বরাবরই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। সে সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন সোনিয়া। চলতি বছরের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও বিইউপি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিযুদ্ধে উত্তীর্ণ হয়েছেন সোনিয়া। সোনিয়ার অর্জন বৃথা যেতে দিতে চান না এলাকাবাসী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও শিক্ষকরা। সমাজের বিত্তবানদের দিকে চেয়ে আছে সোনিয়ার পরিবার। সবার প্রত্যাশা, সোনিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে নিজ গ্রাম ও দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।

গ্রামবাসী জানান, ছোট বেলা থেকে সোনিয়া ভদ্র ও মেধাবী। খেয়ে না খেয়ে কষ্ট করে লেখাপড়া করছেন। মেয়েটি একসঙ্গে দেশের ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। গ্রামের মেয়ে হিসাবে আমরা অনেক খুশি। আর্থিকভাবে সহযোগিতা পেলে মেয়েটি লেখাপড়া শেষ করতে পারবে।

সোনিয়া আফরিন জানান, দরিদ্র পরিবারে আমার জন্ম। বড় ভাই টাকার অভাবে পড়াশুনা করতে পারেননি। বাবা দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান। বাবার পক্ষে সংসারের পাশাপাশি লেখাপড়ার খরচ বহন সম্ভব নয়। আমি নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে লেখাপড়ার খরচ চালানোর চেষ্টা করেছি। স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা আমাকে সবসময় সহযোগিতা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরাজিতে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা। পড়াশুনা শেষ করে সবার মুখ উজ্জ্বল করতে পারি সেটাই আশা। সংসারের যেন হাল ধরতে পারি। দেশের জন্য কাজ করবো। ভর্তির পর লেখাপড়ার খরচ চালানোও অসম্ভব পরিবারের পক্ষে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0069279670715332