তারেক মাসুদের বাড়ির সাইনবোর্ড ভেঙে ফেললো দুর্বৃত্তরা

ফরিদপুর প্রতিনিধি |

আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন  প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের বাড়ির সাইনবোর্ডে ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরপুরে গ্রামের বাড়ির পাশে ঢাকা-গোপালগঞ্জ মহাসড়কে দিক নির্দেশক ওই সাইনবোর্ডটি ছিলো। 

সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোমবার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতার ভাই বাবু মাসুদ। শক্রতা করে এ কাজ করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলছেন, বাড়িটি আর নিরাপদ মনে হচ্ছে না। 

বাবু মাসুদ বলেন, সকালে হঠাৎ করে দেখছি আমাদের বাড়ির পাশের মহাসড়কে ‘তারেক মাসুদের বাড়ি’ লেখা সাইনবোর্ডটি উপড়ে ফেলানো হয়েছে। কে-বা কারা তা উপড়ে ফেলেছে। শত্রুতা করে সাইনবোর্ডটি উপড়ে ফেলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের এ বাড়িটি নিয়ে বেশ ষড়যন্ত্র চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতার বাড়িটিও এখন নিরাপদ মনে হচ্ছে না। প্রশাসন ও সরকারের কাছে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি, একইসঙ্গে বাড়িটি দ্রুত সংরক্ষণে ও নিরাপত্তা দিতে সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহানশাহ ও ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম। 

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ঘটনাটি আমি মৌখিকভাবে শুনেছি। শোনার পরপরই পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

ভাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তারেক মাসুদ আমাদের দেশের সম্পদ। তার নাম ও বাড়ির নাম লেখা সম্বলিত সাইনবোর্ড ভেঙে কিংবা উপড়ে ফেলা বড় দুঃখজনক। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ৬ ডিসেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ওই গ্রামের মসিউর রহমান মাসুদ-নূরুন্নাহার দম্পতির ছেলে। তার বাবা ভাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তারেক সবার বড় ছিলেন। শৈশবে স্থানীয় একটি মাদরাসায় কিছু দিন লেখাপড়া করেছেন তারেক মাসুদ। এরপর তিনি ভাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে ঢাকায় চলে যান। সেখানে নটরডেম কলেজ ও আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে পড়াশোনা শেষে পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হওয়ার পরই তিনি চলচ্চিত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। 

দেশে তিনিই প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আন্দোলনের সূচনা করেন। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা নামক স্থানে বিপরীতমুখী ‘চুয়াডাঙ্গা এক্সপ্রেসের’ একটি বাসের সঙ্গে তারেক মাসুদ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরকে বহনকারী মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত - dainik shiksha প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি - dainik shiksha আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির - dainik shiksha আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি - dainik shiksha পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান - dainik shiksha ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল - dainik shiksha বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029640197753906