দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: ভারতীয় সঙ্গীতের অন্যতম কিংবদন্তি তালাত মাহমুদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভারতের উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌতে জন্মগ্রহণ করেন । তার পিতা মনজুর মাহমুদ ছিলেন একটি বৈদ্যুতিক বাদ্যযন্ত্র দোকানের মালিক। ফলে ছোটবেলা থেকেই সংগীত পরিবেশে বেড়ে উঠেছিলেন তালাত। এছাড়া তার বাবাও ছিলেন একজন কণ্ঠশিল্পী।
উত্তর প্রদেশের লখনৌ মরিস কলেজে পড়াশোনা করেন তালাত মাহমুদ। সেখানেই তিনি ক্ল্যাসিক্যাল সংগীতের ওপর পাঠ নেন পণ্ডিত এসসিআর ভাটের কাছে। পরিবার থেকে তালাতকে বলা হয়েছিলো, তিনি যেন অভিনয় অথবা গান যেকোনো একটা পেশা বেছে নেন। তালাত বেছে নিয়েছিলেন গান।
তালাতের প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত এইচএমভি কোম্পানি তাকে অভিহিত করলো তরুণ উদীয়মান গজল তারকা হিসাবে। ওই বছরই ‘দাগ’ চলচ্চিত্রের জন্য আরেকটি গজল গাওয়ার ডাক পান তিনি। এই গানটিও তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে।
তালাত মাহমুদ ছিলেন প্রথম কোনো ভারতীয় গজল গায়ক, যিনি বিদেশে কনসার্টের জন্য ডাক পেয়েছিলেন। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পশ্চিম আফ্রিকার একটি কনসার্টে তিনি গজল পরিবেশন করেন। এরপর আমেরিকার ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেন, ব্রিটেনের রয়েল অ্যালবার্ট হল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেন পিয়েরে কমপ্লেক্সসহ বিদেশের বিভিন্ন স্থানে গজল পরিবেশন করে শ্রোতাদের মাতিয়েছেন তিনি।
তালাত মাহমুদের গাওয়া বিখ্যাত গজলগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘হামসে আয়া না গায়া’, ‘যায়ে তো যায়ে কাহাঁ’, ‘তাসভীর বানাতা হু’, ‘দিল-এ-নাদান তুঝে হুয়া কেয়া হ্যয়’, ইতনা মুঝসে তু পেয়ার বাঁধা’, ‘সিনে মে সুলাগতে হে আরমা’, ‘শাম-এ-ঘাম কি কাসাম’, ‘জালতে হে জিসকে লিয়ে’, ‘মেরি ইয়াদ মে তুম’, ইত্যাদি।
এছাড়া ‘তোমারে লেগেছে এতো যে ভালো’ এবং ‘আধো রাতে যদি ঘুম ভেঙে যায়’-এর মতো কালজয়ী বাংলা গান গেয়েছিলেন তালাত মাহমুদ।
কিং অব গজল তালাত মাহমুদ তার ক্যারিয়ারে বহু পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছিলেন। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকার তাকে ‘পদ্মবিভুষণ’ পদকে ভূষিত করে। তিনি ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে ভারতের মুম্বাইতে মৃত্যুবরণ করেন।