রাজধানীর যাত্রাবাড়ির ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে (ডিএমআরসি) হামলা-ভাঙচুর করেছে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় কলেজটির বিভিন্ন সামগ্রী ও সরঞ্জাম নিয়ে যায় হামলাকারীরা। সোমবার (২৫ নভেম্বর) বেলা ১২টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের হাজারো শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে গিয়ে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পরে বেলা ১টার দিকে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে পুরো যাত্রাবাড়ি এলাকা।
এর আগে মেগা মানডে ঘোষনা করে কবি নজরুল কলেজের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে ডিএমআরসির উদ্দেশে রওনা হন এই দুই কলেজের হাজারো শিক্ষার্থী। অপরদিকে মোল্লা কলেজের ছাত্ররাও অবস্থান নেন সড়কে।
আরো পড়ুন: রণক্ষেত্র মোল্লা কলেজ, পরিস্থিতি ভয়াবহ
এর আগে প্রথমে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল রোববার রাজধানীর ৩৫টি কলেজের ছাত্ররা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় আগে তারা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এ সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজে সাত কলেজের পরীক্ষা চলছিলো। পরীক্ষার হলে হামলা চালায় ছাত্ররা। তাদের তাণ্ডবে পরীক্ষা পণ্ড হয়ে যায়। পরে বাধ্য হয়ে এই পরীক্ষা স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে রাতে সেন্ট গ্রেগরি কলেজে হামলা চালান সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্ররা।
এদিকে রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা, ভাঙচুর ও প্রশাসনিক কাগজপত্র ফিরিয়ে দিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে ছাত্ররা। এ সময় তারা কলেজে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির ব্যাখ্যা চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ নভেম্বর ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের (ডিএমআরসি) শিক্ষার্থী অভিজিৎ মারা যায়। ডেঙ্গু আক্রান্ত অভিজিতের প্লেইটলেট কমে গেলে আগের দিন তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নিতে চেয়েছিলেন তার পরিবার। কিন্তু ন্যাশনাল মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ তাকে নিতে দেয়নি বলে অভিজিতের সহপাঠীদের অভিযোগ।
আরো পড়ুন: মোল্লা কলেজে হামলা-ভাঙচুর
তারা বলছেন, অভিজিতের মৃত্যুর পর টাকার জন্য লাশ আটকে রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ২০ নভেম্বর ডিএমআরসি কলেজের শিক্ষার্থীরা লাশ নিতে এলেও কোনো সমাধান না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
পরে সন্ধ্যার পর লাঠিপেটা করে পুলিশ শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়। পরদিন ২১ নভেম্বর ডিএমআরসির ছাত্ররা আবার ন্যাশনাল মেডিক্যালে গেলে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদল নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে। তাতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন বলে তাদের অভিযোগ।
পুলিশ উপ কমিশনার জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি, অভিজিতের অবহেলাজনিত মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বার বার বলেছে যে তারা তদন্ত করবে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চাপের মুখে রাখা হয়েছে।
আজ ছাত্র প্রতিনিধি ও মৃতের বাবার সঙ্গে হাসপাতালে মিটিং ছিলো। কিন্তু আমরা জানতে পারি তারা আসে নেই। এদিকে আজ ফের শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে এসেছে। তারা যাত্রবাড়ী থেকে অনেক সংখ্যায় এসেছে। সকাল বেলা থেকে আমরা চেয়েছি তাদের বোঝাতে। অবশেষে আমরা সংখ্যা বাড়িয়ে বিকেলে তাদের বুঝাতে সক্ষম হই, তারা চলে গেছে।