উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া তিন শিক্ষার্থীর জন্য দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর লক্ষ্মীপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষক রয়েছেন চারজন। তবুও এইচএসসিতে তিন শিক্ষার্থীর কেউই পাস করেনি। টানা ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষায় শতভাগ ফেল করেছে এই কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ফুলবাড়ী পৌরসভার নিকটবর্তী লক্ষ্মীপুর বাজারে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত বিদ্যালয়টি ৫৮ বছর বয়সে এসে ফুলবাড়ী উপজেলার লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্কুল পর্যায়ের ফলাফল ভালো হলেও বিগত বছরগুলোয় কলেজ থেকে কেউ এইচএসসি পাস করেনি।
২০২২ খ্রিষ্টাব্দে এইচএসসি পরীক্ষা দেন একজন শিক্ষার্থী এবং সে ফেল করে। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনজন অংশগ্রহণ করলেও কেউ পাস করতে পারেনি। এ বছরেও তিনজন পরীক্ষা দিলেও সবাই ফেল করেছে। এর আগেও ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে এই কলেজে শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল করেছিল।
কলেজের বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, কলেজ বিভাগের পাঠদান অনুমোদনের পর থেকে এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকরা আসেন না। কাগজে কলমে চারজন শিক্ষক থাকলেও সবাই অনিয়মিত। প্রতিবছর কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় ক্লাস হয় না। ফলে শিক্ষার্থীরা ফেল করেন। কলেজ বিভাগের শিক্ষকদের এমপিও হলে সব ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে করেন তারা।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক আবু সায়েম জানান, যেসব কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম ও শতভাগ অকৃতকার্য হয়েছে সেই কলেজগুলো পরিদর্শন করা হবে। যদি প্রতিষ্ঠানগুলো নির্ধারিত ক্রাইটেরিয়া পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে সেসব প্রতিষ্ঠান পাঠদানের অনুমতি পাবে না।
দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুস সামাদ আজাদ জানান, যেসব প্রতিষ্ঠানে যোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী নেই সেসব প্রতিষ্ঠান পাঠদানের স্বীকৃতি হারাবে। এভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে শতভাগ অকৃতকার্য হওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমে আসবে।
সম্প্রতি প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০টি কলেজের শতভাগ শিক্ষার্থীই ফেল করেছে। যার মধ্যে দিনাজপুর জেলার তিনটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।