দৈনিক শিক্ষাডটকম, পঞ্চগড় : অগ্রাহয়ণের শেষ দিন আজ। আগামীকাল ১লা পৌষ। পঞ্চগড়ের সীমান্ত জনপদ তীব্র শীতে বিপর্যস্থ। তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রির ঘরে বিরাজ করছে। সকাল ৭টায় তেঁতুলিয়াআবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে তাপমাত্রা রের্কড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রথম পৌষেই মাঝারী শৈত্য প্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়াবিদরা।
ইতোমধ্যে হিমালয় থেকে ধেয়ে আসছে ঠান্ডা বাতাস, বইছে মৃদু শৈত প্রবাহ। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সূর্য্যের হালকা উত্তাপ থাকছে। তারপর হিমালয় থেকে বাতাস বৈইতে শুরু হলে সন্ধ্যা হতেই হাটবাজারসহ রাস্তাঘাট হয়ে পড়ছে জনশূন্য। মানুষজন হয়ে পড়ছে ঘরমুখি। বিশেষ করে এই অঞ্চলের সমতলের চা বাগানের চা শ্রমিকসহনদী কেন্দ্রিক পাথর শ্রমিকরা নদীর ঠান্ডা জলে নামতে না পেরে তাদের জীবন জীবিকায় টান পড়েছে। জীবিকার তাগিদে নদী পাড়ে বসে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে অবশেষে নদীর ঠান্ডা পানিতে নেমে পাথর সংগ্রহ করছে।জীবন জীবিকার স্বার্থে শীত বস্ত্রের সাথে শীতার্ত মানুষের মাঝে সরকারী খাদ্য সহায়তা জরুরী হয়ে পড়েছে।
শেষ অগ্রহায়নে পঞ্চগড়ে শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। দিন দিন তাপমাত্রা আরও কমে আসছে। ডিসেম্বরের শুরু থেকে এই জেলায় তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠা-নামা করছে। পৌষ মাস শুরু হবে কাল। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে পৌষ শুরু হলে তাপমাত্রা আরও কমতে শুরু করবে। ১০ ডিগ্রির নিচে গড়িয়ে মাঝারী শৈত্য প্রবাহ সৃষ্টি করবে এবং টানা জানুয়ারি পর্যন্ত তীব্র শীতের প্রকোপ থাকবে। গত দু'সপ্তাহ ধরে এ জেলায় সর্ব নিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। দিনের বেলা সূর্য্য উঠলেও রৌদ্রের তেজ তেমন থাকে না। বিকেল গড়াতেই গ্রামের হাট বাজার গুলো জন শূন্য হয়ে
পড়ছে, মানুষ ঘরমুখি হয়ে পড়ছে।
এদিকে শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করায় জেলার হাসপাতালগুলোতে দিন দিন শীতজনিত রোগে শিশু এবং বয়স্ক মানুষ আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দরিদ্র শীতার্তদের জন্য সামান্য পরিসরে শীতবস্ত্র পঞ্চগড়ের পাঁচটি উপজেলার বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে শীতবস্ত্র বরাদ্দের জন্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্ত্রনালয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি এ দুই মাস পঞ্চগড়ের মানুষের জীবনে নেমে আসে অর্বননীয় দুর্ভোগ। তীব্র শীতে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষদের সহায়তার বিষয়টি কঠিন হয়ে পড়ে। আগামী দু'মাস এসব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরকারীভাবে ব্যবস্থা গ্রহনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রোকন উদ্দিন জানিয়েছে, বর্তমানে তেঁতুলিয়ায় গত দু'সপ্তাহ ধরে ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা উঠানামা করছে। আজ বুধবার তাপমাত্রা নেমে গেছে ১১ ডিগ্রির ঘরে। পৌষ পড়লেই এটি আরও নিচে নেমে আসবে। জানুয়ারি মাসের পুরো সময় জুড়ে মাঝারি শৈত প্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে সেই ক্ষেত্রে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির নিচে নেমে আসতে পারে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মনোয়ারুল ইসলাম জানান, শীত বাড়ার সাথে সাথে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে নানা শীতজনিত রোগে। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অনেক শিশু। হাসপাতালে জায়গার অভাবে শিশুরা মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে। অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে শিশুদের নিবিড় পরিচর্যার মধ্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।