দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: সূর্যের আলো হলো ডাবল এজ ব্লেড বা শাখের করাতের মতো। এই আলো একদিকে ভিটামিন ডি ঢেলে দেয়, অন্যদিকে মেলানিন বাড়িয়ে মেলানোমা আর ত্বকের ক্যান্সারের উদ্রেক ঘটাতে পারে। আমাদের ত্বকের নিচে মেলানিন নামে এক ধরনের রঞ্জক পদার্থ রয়েছে, যা সূর্যের আলো ও অতি বেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। ত্বকে সূর্যের আলো পড়লে এই মেলানিনের উৎপাদনের মাত্রা বেড়ে যায়। ত্বকের রঙের জন্য এই মেলানিন দায়ী। বাদামি ও কালো রঙের শরীরে মেলানিন বেশি থাকে, কিন্তু শ্বেতাঙ্গদের শরীরে মেলানিন থাকে কম; যে কারণে তাদের ফর্সা দেখায়। ফর্সা লোকেরা যদি রৌদ্রস্নান করে, তাহলে সূর্য রশ্মির প্রভাবে ত্বক পুড়ে যায়। এতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ত্বকের কোষগুলো।
এ জন্য প্রখর রোদে বের হলে সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। ইনজেকশন হিসেবেও মেলানিন শরীরে প্রয়োগ করা যায়। মেলানিন রোদে ছাতার মতো কাজ করে। এ ধরনের কোনো প্রতিরক্ষা ছাড়া রোদে বের হলে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাবে ত্বকে ভাঁজ পড়ে, এমনকি ত্বকের ক্যান্সারও হতে পারে। ত্বকে এক ধরনের ফুসকুড়িও দেখা দেয়। এ ফুসকুড়ির নাম পলিমরফিক লাইট ইরাপশন। এর ফলে ত্বকে চুলকানি হয়, ত্বক লাল বর্ণ ধারণ করে। দেখতে ঠিক একজিমার মতো মনে হয়। পলিমরফিক লাইট ইরাপশন কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন স্থায়ী হতে পারে। নারীরা পুরুষের চেয়ে এ সমস্যায় আক্রান্ত হয় বেশি। এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো ব্রড স্পেকট্রাম বা বড় মাত্রার সানস্ক্রিন ব্যবহার করা, যা কিনা সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মিকে ত্বকে পৌঁছতে দেয় না বা বাধা দেয়। যে সানস্ক্রিনগুলো সচরাচর পাওয়া যায় সেগুলো হলো– পিজ বুইন সানব্লক এসপিএফ ২০; রো সি টোটাল সানব্লক এসপিএফ ১৬; স্পেকট্রাবান আলট্রা এসপিএফ ১৭; সান ই ৪৫ সান ব্লক এসপিএফ ২৫; ইউভিস্টার্ট আন্টারক এসপিএফ নিউট্রেজনা এসপিএফ ১৫ প্রভৃতি।
এসপিএফ মানে হচ্ছে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা সূর্যরশ্মি প্রতিরোধে কার্যকর উপাদান। রোদে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন শরীরের উন্মুক্ত অংশে মেখে রোদে বের হলে ত্বক ভালো থাকে এবং মলিন হয় না। তবে ক্রিম এমনভাবে মাখবেন না, যার ফলে লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এতে ফলিকুলাইটিস হতে পারে।
মনে রাখতে হবে, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সূর্যালোকের তেজ বেশি থাকে। এ সময় একটু বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে ত্বকের দিকে।
লেখক: ডা. নাফিসা আবেদীন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক