দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে দ্বিপক্ষীয় সফরে ব্যাংককের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সকাল ১০টার পর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি রওনা হন বলে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব গুলশাহানা ঊর্মি জানান।
ব্যাংককে শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানাবেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিন। বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হবে।
সফরে থাইল্যান্ডের রাজপ্রাসাদে দেশটির রাজা ভাজিরালংকর্ন এবং রানী সুথিদার সঙ্গেও সাক্ষাৎ হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
পাঁচ দিনের এই সফরে জাতিসংঘের এশিয়া প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনইএসসিএপি) ৮০তম অধিবেশনেও যোগ দেবেন বাংলাদেশ সরকারপ্রধান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫২ বছরে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান পর্যায়ের প্রথম সফর হতে যাচ্ছে এটি। দুই বন্ধু রাষ্ট্রের মধ্যে ‘সহযোগিতার নতুন জানালা’ উন্মোচিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এই সফর উভয়দেশের জন্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের নির্বাহী সচিব আরমিডা সালসিয়াহ আলিশাবানা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ আগেই জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফরে দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) আলোচনা শুরুর জন্য ‘লেটার অব ইনটেন্ট’ সই করার পাশাপাশি চারটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ব্যাংক অব থাইল্যান্ডের তথ্য বলছে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১১৮ কোটি ডলারের বেশি। এর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানির হিস্যা ৯ কোটির ডলারের মত।
২০২২ খ্রিষ্টাব্দেও বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে পণ্য গেছে মাত্র ৮ কোটি ৩১ লাখ ডলারের; বিপরীতে আমদানি হয়েছে ১১৭ কোটি ডলারের পণ্য।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বড় রকমের এই তফাৎ কমিয়ে আনতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছে সরকার।
শেখ হাসিনার সফরে অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি এবং জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি পৃথক সমঝোতা স্মারক সই হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির জন্যে ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির’ পর্যালোচনার পাশাপাশি অন্যান্য অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়, বিশেষত বিনিয়োগ, পর্যটন, জ্বালানি, স্থল এবং সমুদ্র সংযোগ, উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা বর্ধিতকরণের বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হবে।”
২৬ এপ্রিল গার্ড অব অনার প্রদানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করবেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিন।
এরপর থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। একই দিন প্রধানমন্ত্রী শ্রেথার আয়োজনে রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।
দ্বিপক্ষীয় আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে ২৫ এপ্রিল ইউএনইএসসিএপি’র ৮০তম অধিবেশনের শুরুতে জাতিসংঘ এজেন্ডা ২০৩০ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বিষয়ে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের নির্বাহী সচিব আরমিডা সালসিয়াহ আলিশাবানা সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।