আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত এবং দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পরও বোদা উপজেলার সাকোয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাঁচ মাসেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর কারণ তিনি ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। আর এ কারণেই সরকারি নিয়মনীতি বা আইন-কানুনের কোনো বালাই নেই এ প্রতিষ্ঠানে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সায়েদ মঞ্জুরুল হাসান সূজাকে চেক জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার দুটি পৃথক মামলায় দেড় বছরের কারাদণ্ডসহ ৩২ লাখ ৩১ হাজার টাকা জরিমানার দণ্ডাদেশ দেন পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওস্থ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত। রায়ের পরপরই অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গ্রেফতার এড়াতে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর দীর্ঘ পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও তিনি আর কখনো স্কুলে ফিরে আসেননি।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফুল আলম জানান, রায় ঘোষণার পর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি দণ্ডিত প্রধান শিক্ষক সায়েদ মঞ্জুরুল হাসান সূজাকে পরপর তিনটি কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানের পর গত ১৬ আগস্ট তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। অন্যদিকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত পরিপত্র ও বিধি-বিধান অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৬০ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকায় গত ১৪ অক্টোবর তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ম্যানেজিং কমিটি।
এ সময় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান উপস্থিত থেকে ওই রেজুলেশনে স্বাক্ষর করলেও পরবর্তীতে সাজাপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সায়েদ মঞ্জুরুল হাসান সূজাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্তের রেজুলেশনে স্বাক্ষরে তিনি অস্বীকৃতি জানান। কারণ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পরস্পর ভায়রা ভাই এবং উভয়েই এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা।
মুঠোফোনে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর সত্যতা অকপটে স্বীকার করে বলেন, ‘আমি অত্যন্ত ব্যস্ত আছি, তাই এ বিষয়ে পরে কথা হবে। এরপর তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।’