একজন শিশুর পড়াশোনার হাতেখড়ি পরিবারে শুরু হলেও মূলভিত্তি গড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঠিক পরিবেশের ওপর নির্ভর করে একজন শিশুর ভবিষ্যৎ জীবন। অথচ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশে আজও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো অবহেলিত। এখনও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাজার হাজার প্রধানশিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান অনেকাংশে ব্যহত হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একসাথে ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন যা ছিল একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কিন্তু এসব বিদ্যালয়ে এখনও দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে দপ্তরীর কাজগুলো শিক্ষকদের করতে হয়।
অধিদপ্তর কর্তৃক শিক্ষকদের সকাল নয়টায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু একটি বিদ্যালয় পড়াশোনার উপযোগী করতে অনেক কাজ করতে হয়। যেমন: শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেয়া, মাঠ পরিষ্কার করা, দরজা-জানালা খোলা, টয়লেট পরিষ্কার করা ইত্যাদি। এগুলো করতে প্রায় ১ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন। এ কাজগুলো শিক্ষকদের করতে গিয়ে সকাল আটটায় বিদ্যালয়ে আসতে হয়। তাছাড়া অফিসিয়াল অনেক কাজ যেগুলো দপ্তরীর করার কথা সেগুলো শিক্ষকদের করতে হয়।
এমনিতেই প্রাথমিক শিক্ষকদের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে মর্যাদা ক্ষুন্ন করা হয়েছে। তাছাড়া শিক্ষকরা সব জায়গায় অবহেলিত। যে শিক্ষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে একজন শিক্ষার্থীকে মন্ত্রী, এমপি, সচিব হতে স্বপ্ন দেখান, সেই শিক্ষককে তারাই অবহেলা করেন। অতীতে দেখতাম রাস্তায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের অনেক কদর করতো, অথচ বর্তমানে তার উল্টো। এখন আর শিক্ষকদের তেমন প্রাপ্য সম্মান দেয়া হয় না।
এত অবহেলার পরও শিক্ষকদের দপ্তরীর কাজ করতে হয়। তারপরও এক শ্রেণির লোকের ভাষ্য, শিক্ষকরা বসে বসে বেতন নেয়।
দপ্তরী কাম প্রহরী না থাকায় অনেক বিদ্যালয়ে চুরি হয়। দপ্তরী না থাকায় বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য ক্ষুন্ন হচ্ছে।
এ অবস্থায় দপ্তরীবিহীন বিদ্যালয়গুলোতে দ্রুত দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ দেয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
লেখক: মুন্নাফ হোসেন, মমিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল