রাজধানীর কলাবাগানে শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিনকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে করা মামলার আসামি ইফতেখার ফারদিন দিহানকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
জামিন শুনানিকালে আদালত বলেছেন, আসামির বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তার জামিন বিবেচনার সুযোগ নেই।
আসামির জামিন চেয়ে করা আপিল খারিজ করে বুধবার বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সরওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কাজী ফেরদাউসুল হাসান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি জানান, বিচারিক আদালত দিহানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেছিলেন তিনি। বুধবার আপিল নিষ্পত্তি করে তার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ করতে বলেছেন।
এর আগে, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ওই স্কুল ছাত্রীর সঙ্গে দিহানের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে মেসেঞ্জারে নিয়মিত কথা হতো। পরিচয়ের এক মাসের মাথায় ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৬ জানুয়ারি মেসেঞ্জারে তাদের কথা বলার এক পর্যায়ে ৭ জানুয়ারি দিহান তাদের বাসায় যেতে ওই কিশোরীকে প্ররোচিত করেন।
৭ জানুয়ারি গৃহকর্মী বাসা থেকে চলে যাওয়ার পর দুপুর ১২টার দিকে ফোন দিয়ে কিশোরীকে ডেকে নেন দিহান।
পরে দিহান তার বাড়ি থেকে ওই কিশোরীকে ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে এর আগেই তার মৃত্যু হয়।
পরদিন দিহানকে আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন মেয়েটির বাবা। পুলিশ তখন দিহানকে গ্রেফতার করে।
ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেছিলেন, ‘মেয়েটির শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া না গেলেও যৌনাঙ্গে ক্ষত চিহ্ন পাওয়া গেছে। বিকৃত যৌনাচারের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।’
এই মামলায় ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ৮ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
পরে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।