দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: দুই ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে উঠেছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদু উপজেলার ফারুক আহমেদ নামক এক মাদরাসা শিক্ষককের বিরুদ্ধে।
পাহাড়ি জনপদ লংগদুর দুর্গম গুলশাখালী ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় রাজনগর রাজারবাগী মাদরাসার ৩য় শ্রেণির নাবালক দুই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শিক্ষক ফারুক আহমেদ বাগান থেকে বাঁশ আনবে বলে শিশু দুজনকে বাঁশ বাগানে নিয়ে যায়। পরে গাছে পাতানো টঙ ঘরে বলৎকার করে বলে জানা যায়।
এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও একই মাদরাসার ৩য় শ্রেণির অন্য একজন ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠলে এলাকার মানুষজন তা স্থানীয় ভাবে সমাধান করে দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মানুষের দৃষ্টির অগোচরে তিনি এসব অপকর্মে লিপ্ত আছেন বলে ক্ষোভ স্থানীয়দের।
বলাৎকৃত শিশুদের একজনের পক্ষে চাচা জালাল এবং অন্যজনের পক্ষে বাবা শহিদ জানায়, একজন শিক্ষক যদি এমন আচরণ করে তাহলে আমাদের সন্তান কার কাছে নিরাপদ থাকবে? আমাদের সন্তানদের মিথ্যা কথা বলে জঙ্গলে নিয়ে এসব করে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। মুখোশের আড়ালে থাকা এমন দুষ্টু লোকদের আমরা সঠিক বিচার দাবি করছি।
মাদরাসা প্রধান মাওলানা হাফিজ বলেন, গতকাল শুক্রবার আমাদের মাদরাসা বন্ধ ছিলো। ফারুক স্যার আমাকে কল দিয়েছিলো, তিনি উপরের বাগান থেকে কিছু বাঁশ আনবে। সেই সুবাদে মাদরাসার ছাত্রদের সাথে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে লোক মুখে শুনি তিনি সেই ছাত্রদের বলৎকার করেছে। যদি এর সত্যতা পাই তাহলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম মাওলা বলেন, শিশুদের পরিবার আমার কাছে আসলে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসি। দুই পক্ষের কথা শুনে আমি তাদের আইনের আশ্রয় নিতে সহযোগিতা করি।
গুলশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শোনার পর আমি বিষয়টি জানার চেষ্টা করি এবং পরবর্তীতে তাদের কথা শুনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ প্রদান করি।
গুলশাখালী পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ ওলি উল্লাহ জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে আসলে অভিযুক্ত ফারুক আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফাঁড়িতে নিয়ে আসি। পরে তাকে লংগদু থানায় হস্তান্তর করি।
লংগদু থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হারুনুর রশিদ জানান, পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযোগ আমলে নিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত এই মাদরাসা শিক্ষক ফারুক আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক সদস্য ছিলেন এবং বর্তমানে গুলশাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদে আছেন। তবে তার বিরুদ্ধে পূর্বেও ধর্ষণের নানান অভিযোগ রয়েছে।