নরসিংদীতে ছাত্রদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেকুর রহমানসহ দুই ছাত্রদল নেতা হত্যা মামলায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও তার স্ত্রী বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে নিহত ছাত্রনেতা সাদেকুর রহমানের বড় ভাই আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় এই মামলা করেন। মামলায় যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে মামলার বিষয়টি জানান সদর মডেল থানার ওসি আবুল কাশেম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের জেলা কমিটি ঘোষণার পর থেকে নিহত জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান ও ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাইনুদ্দিন ভূঁইয়ার সঙ্গে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ ও সদস্য সচিব রিফাতের বিরোধ চলছিল। বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রকাশ্যে নাহিদ ও রিফাতকে সমর্থন দিচ্ছিলেন। কমিটি ঘোষণার পর থেকে পদবঞ্চিতরা সাদেক ও মাইনুদ্দিনের নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিল বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি ও আন্দোলন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সাদেক ও মাইনুদ্দিনের নেতৃত্বে পিকআপ ভ্যান ও শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতারা। বিক্ষোভ মিছিলটি জেলখানা মোড় হয়ে চিনিশপুর বিএনপির কার্যালয়ের সড়কে প্রবেশ করা মাত্রই পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে খায়রুল কবির খোকনের নির্দেশে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসাীরা মিছিলকারীদের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করেন। পরে তারা লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে কয়েকজন নেতাকর্মীকে আহত করে। ওই সময় সন্ত্রাসীরা সাদেকুর রহমানকে ঘেরাও করে খুব কাছ থেকে তার মাথায় গুলি করেন। এ ঘটনায় আশরাাফুল নামে আরও একজনকে গুলি করা হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে জেলা হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাদেকের মৃত্যু হয়। চিকিৎসাধিন অবস্থায় একদিন পর শুক্রবার সকালে অপর ছাত্রদল নেতা আশরাফুল মারা যায়।
এদিকে নিহত আশরাফুলে বাবা নাজমুল হক তার ছেলের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন।
সদর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবুল কাশেম জানায়, জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও তার স্ত্রী শিরিন সুলতানাসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরও ৩৫-৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন নিহত সাদেকুরের ভাই আলতাফ হোসেন। এ ঘটনায় যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদেরকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত রোববার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে আসামিদেরকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের মোবাইল নম্বরে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।