কিশোরগঞ্জে দুই বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা (মশিগশি) কার্যক্রমের শিক্ষকরা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানটির প্রত্যেক শিক্ষকের মাসিক বেতন ৫ হাজার টাকা। বর্তমানে ৭৫ জন শিক্ষকের ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বেতন বকেয়া রয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে ২৯ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক বলেন, ৫ বছর ধরে বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষকতা করে আসছেন তারা। দুই বছর ধরে তাদের বেতন বন্ধ রয়েছে। এদিকে সব কিছুর ব্যয় বেড়েছে। এর মধ্যে বিনা বেতনে চাকরি করতে হচ্ছে। সংসার চালাতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষকরা। দ্রুত বেতন পাওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।
হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ট্রাস্টি রিপন রায় লিপু বলেন, সরকারি রাজস্বে নয়, মূলত এই শিক্ষা কার্যক্রমটি প্রজেক্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এটি চলমান একটি প্রক্রিয়া। প্রতিবছর প্রজেক্টের নবায়ন করতে হয়। নবায়ন জটিলতায় বেতন বন্ধ রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যে জটিলতা ভেঙে শিক্ষকরা বকেয়া বেতনসহ চলমান বেতন পাবেন।
জেলা হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ফিল্ড কর্মকর্তা গণপতি রায় বলেন, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে পঞ্চম পর্যায়ের প্রজেক্টের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে একনেকে প্রজেক্টটি পাস হয়। প্রজেক্ট পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রণালয় থেকে টাকা ট্রান্সফারের সুযোগ নেই। এর মধ্যে এই শিক্ষা কার্যক্রমের প্রজেক্ট পরিচালক পদটিও মাঝখানে বেশ কিছুদিন শূন্য ছিল। যে কারণে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাস থেকে ৭৫ জন শিক্ষকের বেতন বকেয়া পড়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন পরিচালক দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে টাকা ছাড় শুরু হয়েছে। শিক্ষকদের মাসিক বেতন ৫ হাজার টাকা। সেই হিসাবে তাদের প্রত্যেকের ২২ মাসের বকেয়া পড়েছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। মোট ৭৫ জনের ২২ মাসে বকেয়া পড়েছে ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া নতুন করে ২৯ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। আশা করা হচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যেই শিক্ষদের অ্যাকাউন্টে বেতন চলে আসবে।
জেলা হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক আকরাম হোসেন বলেন, সারা দেশেই মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষকদের বেতন বকেয়া পড়েছিল। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে বেতন ছাড় করতে শুরু করেছে। কিশোরগঞ্জের সব শিক্ষকদের তথ্য ও অ্যাকাউন্ট নম্বর মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে সবার অ্যাকাউন্টে বেতন চলে আসবে। বিভিন্ন জেলার শিক্ষকরা বেতন পেতে শুরু করেছেন।