পটুয়াখালীর বাউফলে সদ্য পদায়নকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক একটি বিদ্যালয়ে যোগদান করে ৫ দিনের মাথায় অন্য আরেকটি বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার অভিভাবক এবং স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ জানুয়ারি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোল্লা বখতিয়ারের (চলতি দায়িত্ব) স্বাক্ষরিক এক অফিস আদেশের মাধ্যমে বাউফলে পদায়নকৃত সহকারী শিক্ষকদের যোগদানকৃত বিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করে একটি তালিকা বাউফল উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
সেই তালিকা অনুযায়ী পদায়নকৃত এনামুল হক নামের এক শিক্ষক গত ২৪ জানুয়ারি উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের ৮১নং দক্ষিণ শৌলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন এবং ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। নতুন শিক্ষক পেয়ে স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিল। কিন্তু অদৃশ্য কারণে পদায়নকৃত এনামুল হক ৫ দিনের মাথায় ৩০ জানুয়ারি নিজের ইউনিয়ন নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যোগদান করেন।এ বিষয়ে দক্ষিণ শৌলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামিম জাহান লাইজু বলেন, ‘সহকারী শিক্ষক এনামুল হক গত ২৪ জানুয়ারি আমাদের বিদ্যালয়ে যোগদান করে ৩ দিন ক্লাস করেন। এরপর বিদ্যালয়ে আর আসেননি তিনি।তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে জানান, তিনি অন্য বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার অলিউল ইসলামকে জানিয়েছেন তিনি।
দক্ষিণ শৌলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মনজুরুল আলম বলেন, কয়েক বছর যাবৎ বিদ্যালয়ে ৬ জন শিক্ষকের পরিবর্তে ৩ জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করানো হচ্ছিল। ২ জন পদায়নকৃত শিক্ষক পেয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে আনন্দ উৎসব বিরাজ করছিল। কিন্তু সদ্য যোগদানকৃত শিক্ষক এনামুল হক একই আদেশে কীভাবে অন্য বিদ্যালয়ে যোগদান করেছে তা বোধগম্য নয়।
উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার অলিউল ইসলাম বলেন, ‘জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিজের একক ক্ষমতা বলে যোগদানের আদেশ সংশোধন করে বদলি করতে পারেন। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলতে পারবেন। আমি এই উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোল্লা বখতিয়ার জানান, একই তারিখ দিয়ে চিঠি সংশোধন করে শিক্ষক এনামুলকে নাজিরপুর ইউনিয়নের তাঁতেরকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করতে বলা হয়েছে। হয়তো চিঠি পেতে দেরি হয়েছে। তাই ওই শিক্ষক ৮১নং দক্ষিণ শৌলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেছিলেন।