দুই সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের ভরসা প্রাইভেট-কোচিং!

ঝালকাঠি প্রতিনিধি |

আছে বিষয়ভিত্তিক সব শিক্ষক, শিক্ষার পরিবেশ। কিন্তু তারপরও ঝালকাঠির দুই সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের প্রায় সব শিক্ষার্থীকেই নির্ভর করতে হয় স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট-কোচিংয়ে। এক একজন শিক্ষার্থীকে ক্লাসের বাইরে প্রাইভেট পড়ছে হচ্ছে ৩ থেকে ৫টি বিষয়ে। শিক্ষকরা নিয়মনীতি না মেনে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন কোচিং।

শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা যেন কেবলই প্রাইভেট নির্ভর হয়ে পড়েছে। স্কুল শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করার অভিযোগ। শিক্ষকদের এই

প্রাইভেট শিক্ষার কাছে অস্বচ্ছল অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অসহায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, স্কুল শিক্ষকদের কাছে কোচিং বা প্রাইভেট না পড়লে নানা অজুহাতে সন্তানকে হয়রানি করা হয়। এ কারণে বাধ্য হয়েই আমরা ছেলেমেয়েদের প্রাইভেটে-কোচিংয়ে দেই।

শহরের সাংস্কৃতিক সংগঠক সুভাষ বিশ্বাস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সব লেখাপড়া যদি স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানেই হয়, তবে স্কুলের কী প্রয়োজন? এ অবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন।

শহরের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুল পোশাক আর বই ব্যাগ হাতে ঝাঁকে ঝাঁকে শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট পড়ে বের হচ্ছেন। দেখে স্কুল মনে হয় একটা মিনি স্কুল। ১০ থেকে ৩০ জন করে ব্যাচে ব্যাচে পড়ে বের হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। স্কুলের শিক্ষকের বাসা কিংবা কোচিং সেন্টার থেকে  বেড়িয়ে যেতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।

অভিভাবকরা জানন, ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ঝালকাঠি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বাসা কিংবা কোচিং সেন্টারগুলোতে বসে এমন প্রাইভেট পাঠশালা। মাথাপিছু এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা নিয়ে দশ থেকে ত্রিশজনের বিষয়ভিত্তিক ব্যাচে চলে পড়াশোনা। দুটি স্কুলেই বিষয়ভিত্তিক সব শিক্ষক থাকলেও তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সব শিক্ষার্থীকে চার-পাঁচটি করে প্রাইভেট পড়তে হয়। নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না বলে নির্দেশনা থাকলেও দুই স্কুলের শিক্ষকরা তা মানছেন না কোনোভাবেই। শিক্ষকদের এই প্রাইভেট শিক্ষাব্যবস্থায় দরিদ্র অভিভাবক যেন অসহায়। তারা বলছেন, স্কুলের পাঠদানে লেখাপড়া হয়না বলেই বাধ্য প্রাইভেট পড়তে হয়। অনেকক্ষেত্রে নানারকম হয়রানি করেও শিক্ষকরা তাদের কাছে শিক্ষার্থীদে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করে থাকেন কেই কেউ।

ঝালকাঠির জেলা শিক্ষা মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্কুলের সময়সূচির বাইরে শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানো বেআইনি নয়। তবে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানো বা পড়তে আসতে বাধ্য করাটা বেআইনি। এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ঝালকাঠির এ দুটি মাধ্যমিক স্কুলের দিবা ও প্রভাতী শাখায় মোট সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। প্রতিষ্ঠান দুটির বেশির ভাগ শিক্ষকরাই প্রাইভেট পড়ানোর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026850700378418