প্রত্যেক কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ধারীর জন্য ২০০০ টাকা বাধ্যতামূলক আয়কর রিটার্ন দেওয়ার বিধান বাতিল করে অর্থ বিল-২০২৩ পাস হয়েছে।
রোববার (২৫ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিলটি উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। সরকারের আর্থিক প্রস্তাবাবলি কার্যকরকরণ এবং কতিপয় আইন সংশোধনকল্পে এই বিল আনা হয়।
এদিন বিকেল ৩টার দিকে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন। সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সংশোধনী আনেন।
সংসদে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেট নিয়ে নানাবিধ আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন দিক থেকে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে, যা বাজেট বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে। এবারের বাজেটে মূল দর্শন হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্রেইন চাইল্ড সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। তাই আমরা বাজেটে প্রতিটি খাতে, প্রতিটি অংশে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনায় দেশের জনগণকে মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা সম্প্রসারণ করেছি। বিভিন্ন ভাতার হার বৃদ্ধি করেছি, আমরা দেশের সাড়ে চার কোটি মানুষকে বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর মাঝে আনতে পেরেছি। প্রায় এক কোটি পরিবারকে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে আমরা খাদ্য বিতরণ করে যাচ্ছি।
দুই হাজার টাকা করের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রের একজন নাগরিকের অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের মাধ্যমে পাওয়া সুযোগ-সুবিধার বিপরীতে সরকারকে ন্যূনতম কর দিয়ে সরকারের জনসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।’
বিলে ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু অর্থবছরের জন্য আর্থিক বিধান, বিদ্যমান কতিপয় আইন সংশোধনসহ কর প্রস্তাবগুলো অনুমোদন করা হয়েছে।
অর্থ বিলে বল পয়েন্ট কলম তৈরিতে প্রস্তাবিত মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ১৫ শতাংশ থেকে ৫.০ শতাংশ বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিল পাসের প্রক্রিয়ায় জনমত যাচাইবাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর সরকারি দলের শহীদুজ্জামান সরকার, সেলিম আলতাফ জর্জ, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, ফখরুল ইমাম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মুজিবুল হক, মো. রুস্তম আলী ফরাজী, রওশন আরা মান্নান, কাজী ফিরোজ রশীদ এবং গণফোরামের মোকাব্বির খান আলোচনায় অংশ নেন।
অর্থমন্ত্রী অর্থ বিলের ওপর আনীত সংশোধনী তালিকা নম্বর- ২ এবং ২(ক) এর কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করেন। বাকি প্রস্তাবগুলো কণ্ঠ ভোটে নাকচ হয়ে যায়।