দুদকের মামলায় জামিন পেলেন রুয়েটের সাবেক ভিসি ও রেজিস্ট্রার

দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাজশাহী |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাজশাহী: নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় নিম্ন আদালতে জামিন পেয়েছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সাবেক উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম সেখ এবং সাবেক রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেন। মঙ্গলবার (২৮ মে) রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে তারা জামিন নেন।

রুয়েটের সাবেক এই দুই কর্তাব্যক্তির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী একরামুল হক, ইব্রাহিম হোসেন ও হাবিবুর রহমান আদালতে নথিপত্র উপস্থাপন করে তাদের জামিনের আবেদন করেন। দুদকের রাজশাহীর আইনজীবী শহীদুল হক খোকন জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আল-আসাদ মো. আসিফুজ্জামান মামলার তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। 

এর আগে বেলা ১১টায় আদালতে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। তখন সাবেক ভিসি রফিকুল ইসলাম সেখ ও সাবেক রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেন কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়ান। শুনানি শেষ হয় সাড়ে ১১টায়। শুনানির সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক আদালতকে জানান, রুয়েটের নিয়মকানুন মেনেই নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বিজ্ঞাপিত পদের চেয়ে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) যত পদে নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছিল, তার চেয়ে কমসংখ্যক পদেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর বিজ্ঞাপনে উল্লেখ ছিল প্রয়োজনে পদের সংখ্যা বাড়তে কিংবা কমতে পারে। তাই এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। আর নিয়োগ কমিটি শুধু সুপারিশ করেছিল। নিয়োগ অনুমোদন দিয়েছিল সিন্ডিকেট সভা। আরও বেশকিছু ব্যাখ্যা উপস্থাপন করে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন।

এর বিরোধিতা করে দুদকের আইনজীবী শহীদুল হক খোকন আদালতকে বলেন, রফিকুল ইসলাম সেখ ভিসি থাকাকালে নিজের আত্মীয়-স্বজনকে চাকরি দিয়েছেন স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে। এ জন্য বিজ্ঞাপিত পদের চেয়ে আসামিরা অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। স্বজনপ্রীতি করে তারা ঘৃণিত অপরাধ করেছেন। তাই তিনি জামিনের বিরোধিতা করেন। পরে শুনানি শেষে আদালত আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর কাঠগড়া থেকে নেমে দুই আসামি আদালত ভবনের নিচতলায় রাজশাহী মহানগর আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুসাব্বিরুল ইসলামের কক্ষে গিয়ে কিছুক্ষণ বসেন। এরপর তারা রুয়েটে চলে যান।

দুদকের আইনজীবী শহীদুল হক খোকন বলেন, ‘দুদক মামলা করার পর দুই আসামি উচ্চ আদালতে গিয়ে ৫৬ দিনের জামিন নেন। সেই জামিন শেষে তারা ধার্য তারিখে নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিনের প্রার্থনা করেন। তারা যেহেতু উচ্চ আদালতের জামিনে ছিলেন, তাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।’

রফিকুল ইসলাম সেখ রুয়েটের ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের অধ্যাপক। একই বিভাগের অধ্যাপক সেলিম হোসেন। দুজনের বাড়িই সিরাজগঞ্জ জেলায়। তারা ভিসি ও রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে থাকাকালে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে তাদের বিরুদ্ধে নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি তদন্ত করে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে দুদক ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে।

অনুসন্ধান শেষে গত ২৭ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে একে অন্যকে লাভবান করার জন্য অপরাধমূলক, অসদাচরণ ও বিশ্বাস ভঙ্গ করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। লিখিত পরীক্ষা কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষায় অধিক নম্বর প্রদান করে নিয়োগদান করেছেন। তারা ৬ জন সেকশন অফিসারের পদের বিপরীতে নিয়োগ দিয়েছেন ১৩ জনকে। জুনিয়র সেকশন অফিসার পদের অনুমোদন ও শূন্য পদ না থাকা সত্ত্বেও এই পদে নিয়োগ প্রদান করেছেন। পিএটু ভিসি ও পরিচালক পদে দুজনকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তিনজনকে নিয়োগ প্রদান করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025579929351807