সমাবেশ ও হরতালের দুই দিনে বাস ডিপোতে হামলা, ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনায় ৮৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে সরকারি পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিসি)।
রোববার (২৯ অক্টোবর) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো বিআরটিসির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর বিকেল ৪টায় বিএনপি-জামায়াতের সমাবেশে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৩০০ জন অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী বিআরটিসি মতিঝিল আন্তর্জাতিক বাস ডিপোতে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। ডিপোর গেট টপকে ডিপোর অভ্যন্তরে প্রবেশ করে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় আন্তর্জাতিক সার্ভিসের কাউন্টার ও বিশ্রামাগার এবং ট্রাফিক শাখায় ভাঙচুরসহ তাণ্ডব চালায়।
একপর্যায়ে দুষ্কৃতকারীরা নিচতলায় আন্তর্জাতিক সার্ভিসের কাউন্টারে অগ্নিসংযোগ করে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে। হামলায় ঢাকা-আগরতলা, ঢাকা-কলকাতা, আগরতলা-ঢাকা-কলকাতা আন্তর্জাতিক কাউন্টারের অভ্যন্তরে কম্পিউটার, টেবিল, চেয়ার, সোফা, রুমের জানালার গ্লাস সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে আনুমানিক ২৫ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ডিপোর নিরাপত্তার দায়িত্বে ১০ জন আনসার সদস্য ও ১০০ জন নিজস্ব জনবল দিয়ে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ না হওয়ায় ডিপোর জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে আনসার সদস্য কর্তৃক ১৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। ঘটনার একপর্যায়ে বাংলাদেশ পুলিশের প্রায় ৫০ জন সদস্য ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। সবার যৌথ প্রচেষ্টায় দুষ্কৃতকারীরা পিছু হটে।
গত ২৮ অক্টোবর আনুমানিক বিকেল ৪টার দিকে বিএনপি-জামায়াতের সমাবেশে অংশগ্রহণকারী অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা শাহাজাহানপুরে ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৬২৫৭ রেজিস্ট্রেশন নম্বরের বাসে অগ্নিসংযোগ করে। এতে বাসটির সম্পূর্ণ অংশ পুড়ে যায়। ফলে বিআরটিসির ৬০ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়। দুষ্কৃতকারীর হামলায় বাসে নিয়োজিত চালক গুরুতর আহত হয়। এ বিষয়ে ২৮ অক্টোবর মতিঝিল থানায় এবং ২৯ অক্টোবর শাহজাহানপুর থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উত্তরার জসিমউদ্দিন এলাকায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সার্ভিসের চারটি বাস ভাঙচুর করা হয়। বাসের জানালার গ্লাস ও উইন্ডশিল্ডের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে প্রায় ২ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। এছাড়া দুষ্কৃতকারীরা বেলা ১১টার দিকে জোয়ারসাহারা বাস ডিপোর নিয়ন্ত্রণাধীন ঢাকা মেট্রো-ব-৫০৯৮ নম্বর বাসে টঙ্গী চেরাগ আলী নামক স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে বাসের তিনটি সিট পুড়ে যায়। এ ঘটনায় এক লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। উভয় ঘটনায় দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।