পটুয়াখালীর দশমিনা সরকারি আবদুর রসিদ তালুকদার ডিগ্রি কলেজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘রসিদ কলেজ’ হলেও এখানে রসিদ ব্যবহারের কোনো বালাই নেই। বিনা রসিদে শিক্ষার্থীদের থেকে নেয়া হয় হাজার হাজার টাকা। ক্ষমতা আর পটপরিবর্তনের পাশাপাশি কলেজের কর্তৃত্ব এবং নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটলেও দুর্নীতির টাকার ভাগ পান প্রায় সবাই। অনিয়ম, লুটপাট আর দুর্নীতির আখড়া যেন এই প্রতিষ্ঠানটি। উপজেলার যে বিদ্যাপীঠ থেকে শিক্ষার্থীদের ন্যায় আর অন্যায় না করার শিক্ষা নেয়ার কথা সেই বিদ্যাপীঠের ক্যাম্পাসেই শিক্ষকদের অনিয়মের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে হয় শিক্ষার্থীদের। লাগাতার চলা অনিয়মের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আচরণও প্রশ্নবিদ্ধ। অন্যদিকে অনিয়মের তথ্য জানার জন্য তথ্য অধিকার আইনে কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আনিচুর রহমানের কাছে আবেদন করলেও তিনি তথ্য দিতে গড়িমসি করেন।
একটি সূত্র জানায়, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে করোনাকালীন এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অটো পাশ দেয়া হয়। পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের নেয়া পরীক্ষার ফি ফেরত না দিয়ে রেখে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের আটকে রাখা অর্থ ও শিক্ষকদের ডিগ্রি কোচিং ফিসহ মোট চার লাখ ৭৫ হাজার টাকা একত্রিত করে কলেজে বাউন্ডারি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। অভিযোগ আছে, তারকাঁটার বাউন্ডারি দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। এছাড়া ভর্তি ও পরীক্ষার ফরম পূরণসহ বিভিন্ন ফি’র অর্থ শিক্ষার্থীদের কলেজের ব্যাংক হিসাবে জমা দেয়ার কথা। কিন্তু কলেজের শিক্ষকরা ব্যাংক হিসাবে জমা না দিতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহী করে নিজেরা হাতে জমা নিয়ে ভর্তি বাণিজ্য ও ফরম পূরণের নামে হাজার হাজার টাকা আদায় করে বড় একটি অংশ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। রসিদ ছাড়া টাকা আদায় চলছে প্রায়ই। এছাড়া গ্রুপিংয়ে বিভক্ত শিক্ষকরা।
অন্যদিকে সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহমুদ উল্লাহর দায়িত্ব পালনের সময় কলেজ হিসাব থেকে তার আয়-ব্যয়ের তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আনিচুর রহমানের কাছে আবেদন করলেও তিনি তথ্য দিতে গড়িমসি করেন। সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহমুদ উল্লাহর বক্তব্য নেয়ার জন্য তাকে বহুবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আনিচুর রহমান বলেন, ‘বিগত সময়ে অনিয়ম হয়েছে এটা সত্য। আমি একটু ব্যস্ত ছিলাম তাই তথ্য অধিকার আইনের আবেদনের তথ্য দিতে পারিনি। এখন দেব।’ এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাফিসা নাজ নীরা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হবে।