খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ড. মো. সেলিম হোসেন (৩৮) গতকাল মঙ্গলবার আকস্মিক মারা গেছেন। ছাত্র নামধারী কিছু রাজনৈতিক কর্মী ওই শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার কারণেই তিনি মারা গেছেন অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁরা উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করেন। গত রাত ১১টা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপাচার্য ও অন্য জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা সভা করছিলেন। শিক্ষার্থীরা ওই ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি দাবি করছেন।
কুয়েটের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লালন শাহ হলের প্রভোস্টেরও দায়িত্বে ছিলেন ড. মো. সেলিম। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে হলের একদল ছাত্র তাঁর সঙ্গে খুবই দুর্ব্যবহার করেন; এমনকি তাঁদের কথা না শুনলে পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে তাঁকে হুমকি দেন। এ ঘটনায় সেলিম হোসেন খুবই বিমর্ষ হয়ে পড়েন। দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি ক্যাম্পাসের অদূরে তাঁর বাসায় যান। বাসার বাথরুমে গিয়ে অনেকক্ষণ পরও না বের হলে এক পর্যায়ে দরজা ভেঙে তাঁকে অচেতন অবস্থায় বের করা হয়। সেখান থেকে তাঁকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে এবং পরে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
এই খবর ক্যাম্পাসে পৌঁছলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁদের শিক্ষক ছাত্র নামধারী দুর্বৃত্তদের কাছে অপমানিত হয়ে মারা গেছেন বলে তাঁরা দাবি করতে থাকেন। ক্যাম্পাসে ওই শিক্ষকের মরদেহ আনা হলে শিক্ষার্থীরা তা আটকে রাখেন এবং প্রশাসনের কাছে এই মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তি দাবি করতে থাকেন। রাত ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধদের বুঝিয়ে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন তথা উপাচার্যের অফিসের সামনে অবস্থান করছিলেন। এক পর্যায়ে উপাচার্যের অফিসকক্ষে ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকরা বৈঠক করেন। রাত ১১টার পরও এই বৈঠক চলছিল।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা মনোজ কুমার মজুমদার জানান, মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ছাত্ররা ভিসির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে ছাত্রদের দাবি কী তা তিনি জানাতে পারেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন ওই শিক্ষকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।