অতিবৃষ্টির ফলে অভয়নগর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে পাঠদান কার্যক্রম। ভবদহের জলাবদ্ধতার কারণে ২ সপ্তাহ ধরে ওই বিদ্যালয়গুলোতে নোংরা পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। এতে ব্যাহত হচ্ছে তাদের পাঠদান কার্যক্রম। অনেক সময় বৃষ্টির পানিতে পা পিছলে পড়ে নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের বই খাতা, ভিজে যাচ্ছে পোশাক। তাছাড়া খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এসব কোমলমতি শিক্ষার্থী।
সরজমিন দেখা যায়, উপজেলার ডুমুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেদভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আন্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বলারাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দিঘলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডহর মশিয়াটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডহর মসিয়াটি উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডাঙ্গা মশিয়াটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুন্দলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সড়াডাঙ্গা জামতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সড়াডাঙ্গা ডহর মশিয়াটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোবিন্দপুর ময়নামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলের গাতি হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া সুন্দলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, সুন্দলী সৈয়দপুর ট্রাস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডহর মশিয়াটি উত্তরপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ডুমুরতলা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফুলেরগাতী হরিশপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সড়াডাঙ্গা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মশিয়াহাটী মাধ্যমিক বিদ্যালয় জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে যেতে পারছে না।
হাঁটু পানি পেরিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যেতে হচ্ছে স্কুলে। ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহ আগে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
ডুমুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পলাশ মল্লিক জানান, জলাবদ্ধতার কারণে মাঠে কোমর পর্যন্ত পানি থাকায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে পারছে না। ক্লাস করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই স্কুলের পাশে একটি দোকানের বারান্দায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোনো রকমে ক্লাস করছি। স্কুলে শিক্ষার্থীর উপস্থিতির সংখ্যা খুবই কম। মাত্র ৯-১০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়।
সুন্দলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম ধর জানান, স্কুলের মাঠে কোমর পর্যন্ত পানি এবং প্রতিটা শ্রেণিকক্ষে এক থেকে দেড় ফুট পানি রয়েছে। ক্লাস করতে সমস্যা হওয়ায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেম জানান, উপজেলার ১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে পারছে না। তাই আপাতত পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছেন। উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার ৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কক্ষের ভেতরে পানি, অফিস কক্ষেও পানি। জলাবদ্ধতার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এতে পাঠদান ব্যাহত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের চরম সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যালয়গুলোতে বিকল্প পদ্ধতিতে পাঠদানের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।