এইচআইভি এইডস আক্রান্তদের ১৮ শতাংশই বিদেশ থেকে এই রোগ শরীরে বহন করে দেশে আসছে। এক্ষেত্রে দেশ থেকে পূর্ণাঙ্গ সুস্থতার রিপোর্ট নিয়ে গেলেও দেশে আসার ক্ষেত্রে বিমানবন্দরে পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় অনেকটা বাধাহীনভাবেই এসব রোগী দেশে ঢুকছে। কারণ, আমাদের এ ধরনের কোনো নীতিমালা নেই। ফলে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
এইচআইভি এইডসে আক্রান্ত ঝুঁঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী শীর্ষক মিডিয়া এডভোকেসি গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন। গতকাল শনিবার দুপুরে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের কমিউনিটি ফোরাম অব বাংলাদেশ এই বৈঠকের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার ওয়েলফেয়ার বোর্ডের ডেপুটি ডিরেক্টর জাহিদ আনোয়ার বলেন, দেশের বাইরে কাজ করতে গিয়ে এইডস আক্রান্ত হয়ে কত সংখ্যক মানুষ মারা গেছে সেই তথ্য আমাদের কাছে আছে। কিন্তু আক্রান্তের যথাযথ তালিকা আমাদের কাছে নেই। কারণ, কেউ এইডস আক্রান্ত হলে তথ্য গোপন করে, আমাদের কাছেও বলতে চায় না।
কেউ যদি আক্রান্ত হয়ে দেশে আসে, তাহলে আমরা তাদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস এন্ড ক্রাইমের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মো. আবু তাহের বলেন, এইডস আক্রান্তদের মধ্যে মাদকসেবীদের সংখ্যা বিশাল। আমাদের দেশে মাদকের পেছনে প্রতি বছর যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় তা দিয়ে এক-দুইটা পদ্মা সেতু আমরা করে ফেলতে পারব। এইডস আক্রান্তের অন্যতম কারণ হলো আমাদের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। তাদের প্রতিও আমাদের অনেক অবহেলা রয়েছে। অনেক সময় তারা অসুস্থ হলে আমরা তাদের হাসপাতালে ঢুকতেও দিই না। আর যদি এইডস আক্রান্ত হয়ে আসে, তাহলে তো কোনো কথাই নেই। এসব বিষয়ে আমাদের আরো ভাবতে হবে।
ইউএনএইডসের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. সায়মা খান বলেন, নারী অভিবাসী কর্মীরা কাজ করতে গিয়ে যেসব সমস্যা পার করে আসেন তা খুবই ভয়াবহ। তাদের মধ্যে এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যৌনকর্মী, সমকামী, মাদকাসক্তদের মধ্যেও এইডস আক্রান্ত বাড়ছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কমিউনিটি ফোরাম অব বাংলাদেশের চেয়ারপার্সন শাকিরুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য দেশে অভিবাসী জনগোষ্ঠীর সব দায়িত্ব তাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের। কিন্তু আমাদের দেশের নিয়োগকারীরা কর্মী পাঠিয়েই দায়মুক্ত হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তাদেরও জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে আসা যায় কিনা ভাবতে হবে। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি বলেন, এইচআইভি এইডস আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে গণমাধ্যমগুলো এইডস নিয়ে সঠিক তথ্য পাচ্ছে না। অনেক সময় কর্তৃপক্ষও এসব নিয়ে তথ্য গোপন করে, যে কারণে জটিলতা তৈরি হয়।