মিথিলা মুক্তা, দৈনিক শিক্ষাডটকম: দেশে পিএইচডিধারী ৫১ হাজার ৭০৪ জন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
বয়সভিত্তিক হিসাব অনুযায়ী এসব পিএইচডিধারীর অধিকাংশই চল্লিশোর্ধ্ব—২৯ হাজার ৯৯৮ জন। ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী আছেন ১৫ হাজার ১১৪ জন। ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সসীমার অন্তর্ভুক্ত আছেন ৫ হাজার ৮০৯ জন। আবার এ তালিকায় ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সসীরাও আছেন, যার সংখ্যা ৭৮৩ জন।
তথ্য অনুযায়ী, পিএইচডিধারীদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৫১৭। নারী আছেন ১৪ হাজার ১৮৭ জন। যদিও ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সসীমার অন্তর্ভুক্তদের মধ্যে নারী পিএইচডিধারী তুলনামূলক বেশি—৪০৩ জন। পুরুষ পিএইচডিধারী আছেন ৩৮০ জন।
বিবিএসের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, পিএইচডির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে ৩০ হাজার ১৬৬ জন। চট্টগ্রাম বিভাগে ৭ হাজার ১৪৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ হাজার ১৬৪, খুলনা বিভাগে ২ হাজার ৯৩৮, রংপুরে ২ হাজার ১২০, ময়মনসিংহে ২ হাজার ৩৯, সিলেটে ১ হাজার ৯৯০ এবং বরিশাল বিভাগে ১ হাজার ১৪৩ জন।
বিগত বছরগুলোর মধ্যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সবচেয়ে বেশি পিএইচডি দিয়েছে করোনার বন্ধের মধ্যে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ৬৪১ জন পিএইচডি অর্জন করেছেন। ওই বছর পিএইচডি পেতে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৮৯০ জন। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে তা কমে ৩৫৩ জনে দাঁড়ায়।
]ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে পিএইচডি অর্জন করেছিলেন ২৩৩ জন। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে পেয়েছিলেন ৪০০। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে পিএইচডি দেয়া হয় ৪৪১ জনকে। এর আগে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে ৪৭৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৫২, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ৪৮৮ ও ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে ৩৭০ জনকে পিএইচডি ডিগ্রি দেয়া হয়।
দেশে পিএইচডি বিতরণের দিক থেকে এগিয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্যতম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ। ২০১৯ পর্যন্ত কুষ্টিয়ায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টি ৪৬৪ জন গবেষককে পিএইচডি দিয়েছে। একই সময় পর্যন্ত এমফিল ডিগ্রি দেয়া হয়েছে ৬৬৬ জন শিক্ষার্থীকে।
ইউজিসির হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে দেশে ৪৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। ওই বছর ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩৫৩ গবেষককে পিএইচডি দেয়া হয়। বাকি ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয় এ এক বছরে একটিও পিএইচডি দিতে পারেনি।
ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘দেশে এখন অনেকে পিএইচডিকে আলংকারিক ডিগ্রি হিসেবেও ব্যবহার করছেন। তাই পিএইচডির সংখ্যা বৃদ্ধি মানেই গবেষক বৃদ্ধি পাচ্ছে এমনটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। যারা পিএইচডি করছেন তারা যদি তাদের এ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গবেষণা করেন, তাহলে অবশ্যই দেশ উপকৃত হবে। কিন্তু কেউ যদি সেটি না করেন তাহলে এই পিএইচডিধারীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে রাষ্ট্রের লাভবান হওয়ার সুযোগ নেই।’