রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল দেশে শোধন করা সম্ভব নয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রাশিয়া থেকে পাঠানো ৫০ লিটার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের (ক্রুড অয়েল) নমুনা রাষ্ট্রীয় তেল পরিশোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) নিজস্ব পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়েছে।
নমুনা পরীক্ষার পর ফলাফল মূল্যায়ন করে গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান বরাবর প্রতিবেদন জমা দেয় ইআরএল কারিগরি কমিটি। ৫০ বছর আগের এই পুরনো রিফাইনারিতে রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিশোধন করা সম্ভব নয় বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ।
গতকাল সকাল ১০টায় বিপিসিতে পাঠানো নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনটি বিপিসির চেয়ারম্যানের পক্ষে গ্রহণ করেন মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) কুদরত-ই-ইলাহী। ২০ পাতার প্রতিবেদনের মতামত অংশে ইআরএলের কারিগরি কমিটির সদস্যরা উল্লেখ করেন, ইস্টার্ন রিফাইনারির বর্তমান কাঠামোতে রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিশোধন করা সম্ভব নয়। প্রতিবেদনের খুঁটিনাটি বিষয় পর্যালোচনা শেষে আগামী দু-এক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক রাশিয়ার ওই প্রতিষ্ঠানকে জানানো হতে পারে।
ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. লোকমান বলেন, ‘রাশিয়া থেকে পাঠানো অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের পরীক্ষার ফলাফল আজ (গতকাল) বিপিসিতে চেয়ারম্যান বরাবর পাঠিয়েছি। ’
ইআরএল সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষার জন্য রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল গত ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে ইআরএল পরীক্ষাগারে এসে পৌঁছায়। সেদিনই ইআরএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন অ্যান্ড প্ল্যানিং) রায়হান আহমেদকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। এই কমিটিই পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়টি তদারকি করেছিলেন।
বিপিসির একাধিক কর্মকর্তারা বলেন, ‘৫০ বছরের পুরনো ইস্টার্ন রিফাইনারিতে মূলত মারবান এবং অ্যারাবিয়ান লাইট ক্রুড অয়েল রিফাইন করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানের ইয়েল্ড প্যাটার্ন এভাবেই তৈরি। এই প্যাটার্নে অন্য কোনো ক্রুড অয়েল রিফাইন করা সম্ভব নয়। ’
এদিকে রাশিয়া পরিশোধিত তেলের যে প্রস্তাব দিয়েছে সেই তেল কিভাবে কেনা যায়, তা পর্যালোচনা করছে বিপিসি। বিপিসির কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া থেকে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে। তেলের মান, ব্যবহারের উপযোগিতা, দাম, আনার খরচসহ বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।