দেশের সবচেয়ে বড় নতুন ক্যাম্পাস হবে জবির: শিক্ষা উপদেষ্টা

দৈনিক শিক্ষাডটকম, জবি |

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্যাম্পাসের মেগা প্রকল্পটি একনেক সভায় পাস হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির বিষয়ে মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে তিনি একথা জানান। 

বৈঠকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ শিক্ষার্থী-শিক্ষক প্রতিনিধি এবং ইউজিসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমি নিজে উদ্যোগ নিয়ে একনেক সভায় প্রকল্প পাস করিয়ে নিয়েছি। কেরানীগঞ্জের সম্পূর্ণ একটা নতুন ক্যাম্পাস তৈরি করা হবে। বাংলাদেশে এভাবে এতো বড় একটা নতুন ক্যাম্পাস আগে কখনো তৈরি করা হয়নি। পাকিস্তান আমলের শেষে শুধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটা ক্যাম্পাস হয়েছিলো। 

তিনি বলেন, এতো বড় একটা মেগা প্রকল্প আমরা নেবো কিনা দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিলো। কিন্তু একনেকের গত মিটিংয়ে (অনুমোদন হয়েছে), যেটা আমাদের ছাত্ররা এবং শিক্ষকরাও জানেন না। কারণ, এখন পর্যন্ত সেটার মিনিটসটাও জারি হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস; যেখানে ছাত্রাবাস থাকবে, প্রশাসনিক ভবন থাকবে, স্কুল থাকবে, চিকিৎসাকেন্দ্র থাকবে- এ রকম একটা প্ল্যান করার অনুমতি একনেক থেকে অনুমোদন করিয়ে নেয়া হয়েছে।

চলমান প্রকল্প নিয়ে তিনি বলেন, আর তাদের যে চলমান প্রকল্প আছে সেখানে কিছু জমি অধিগ্রহণ করা এবং জমিগুলো ঠিকঠাক করে কিছু প্রাথমিক কাজ করার, সেটা হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ধাপ। প্রথম ফেইজটাও ওরা জানার আগে আমি নিজ উদ্যোগে করেছি, এটা পরিকল্পনা কমিশনে পড়েছিল অনেকদিন ধরে। আমি সেটা পাশ করিয়ে দিয়েছিলাম।

চলমান প্রকল্প নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা আরো বলেন, চলমান প্রকল্প নিয়ে আমি তাদের অভিযোগ বুঝতে পারি। এতো বছর ধরে প্রকল্পটা কেনো হচ্ছে না, ভূমি অধিগ্রহণ কেনো হয়নি, তারা বলছে যে প্রকল্প পরিচালক অনেক দুর্নীতি করেছেন। আমি বলেছি তদন্ত করে দেখুক কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে সেই প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। নতুন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেয়া হোক। 

বুয়েটের মাধ্যমে তারা প্রথম প্রকল্পের পরিচালনা করছে। এটা এগিয়ে নেয়া যেতে পারে। তারা চাচ্ছে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তাদের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হোক। তাতেও কোনো সমস্যা নেই। তারা যদি সেটা চান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো স্বায়ত্তশাসিত অনেকাংশে, তারা যদি সেটা চান তাহলে মন্ত্রণালয়ের এতে কোনো আপত্তি নেই। বরং আমরা সহায়তা করবো কী করে তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যোগাযোগ করিয়ে দেয়া যায়। মন্ত্রণালয় এতে সহায়তা করবে।

উপদেষ্টা বলেন, কেরানীগঞ্জে যে বিশাল জায়গাটা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে সেটা আমি দেখিনি। কিন্তু এটা একটা বিরাট জায়গা এবং একটা মহাপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এটাকে এই অন্তর্বর্তী সরকারের একটা মেগা প্রজেক্ট হিসেবে মনে করা যেতে পারে। এটার শুরুটা হবে এখন।

তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ বিষয়টা তারা নিজেরাও বলেছেন, ভুল বোঝাবুঝির জন্য হয়েছে। তাদের আন্দোলনের আগেই অনেক কিছু করিয়ে দিয়েছি। প্রথম ধাপের পাস করিয়ে দিয়েছি আমার নিজের উদ্যোগে। মহাপরিকল্পনাটাও আমরা একনেক সভায় পাস করিয়ে দিয়েছি। তারা এটা অবগত ছিলো না এ সম্পর্কে। আর তাদের ছোটখাটো কিছু দাবি আছে সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সমাধান করা যেতে পারে। যেমন তারা চাচ্ছেন এতো দিন যতোদূর নিতে হয়েছে তার একটা হোয়াইট পেপার। আমি বললাম, আমি কি তোমাদের জন্য পেপার তৈরি করবো, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আছে তারা তৈরি করবেন।

ছাত্ররা কি আন্দোলন থেকে ফিরে যাচ্ছে-এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ওরা প্রচণ্ড সম্মান দেখিয়েছে আমাকে। আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে শুধু ছাত্রদের সঙ্গে দেখা করার জন্য এসেছি। মনে করেছি যে আমি তাদের সমস্যার সব সমাধান দিতে পেরেছি।

প্রসঙ্গত, কিছু দিন ধরে পাঁচ দফা দাবিতে দীর্ঘ দিন আন্দোলন করে আসছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো- স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এই দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে; শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখাসহ ঘোষণা করতে হবে যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হয়েছে; অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং পুরাতন ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল করতে হবে; সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষিত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক বাজেট সর্বনিম্ন ৫০০ (পাঁচশত) কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।

এসব দাবিতে গত সোমবার তারা সচিবালয় ঘেরাও করেন। গতকাল শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর জবি শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এমপিওভুক্তির নতুন আদেশ জারি - dainik shiksha এমপিওভুক্তির নতুন আদেশ জারি জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি কুবির বঙ্গবন্ধু হল ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন - dainik shiksha কুবির বঙ্গবন্ধু হল ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি - dainik shiksha ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032689571380615