দৈনিক শিক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর সেই ডিডি রেবেকাকে ওএসডি

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি!  শিরোনামে দৈনিক শিক্ষাডটকম-এ গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিলো। প্রতিবেদনটি পাঠ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্তারা রেবেকাকে ফের ওএসডি করার সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু গত কয়েকদিন রেবেকা নানাভাবে তদবির করে তা ঠেকানার চেষ্টা করেছিলেন। অবশেষে গতকাল (২২ সেপ্টেম্বর) আবার ডিডি পদ থেকে সরিয়ে মাউশি অধিদপ্তরে ন্যাস্ত করে আদেশ জারি করে। 

রেবেকাকে ডিডি করায় তীব্র প্রতিবাদ জানান এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারী ও সরকারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা। তারা গত ২০ বছরে রেবেকার কৃত অপকর্মের শাস্তি দাবি করেন। দৈনিক শিক্ষায় গত ১৪ বছর ধরে রেবেকাকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া শাস্তির তথ্য মনে করিয়ে দেন বর্তমান শিক্ষা প্রশাসনের কর্তাদের।  

  গত ২০ বছরে কৃত অপরাধে তার বরখাস্ত হওয়ার কথা । কিন্তু না, তার বদলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার ঢাকা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। তার পুরো নাম মোসা. রেবেকা সুলতানা। মূল পদ সরকারি হাইস্কুলের প্র্রধান শিক্ষক। গত ১৩ সেপ্টম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে ঢাকা অঞ্চলের ডিডি পদে বসানোয় অবাক হয়েছেন শিক্ষাখাতের অনেকেই।

আরো পড়ুন: তেজগাঁও সরকারি গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেবেকার যত অপকর্ম

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন রেবেকার জন্য অনেকবার শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ, দীপু মনি ও মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবদের তদবির করেছেন। দুর্নীতির দায়ে রেবেকাকে বরখাস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন। এমন কথা শিক্ষা খাতে সবার মুখে মুখে। পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও রেবেকার ভালো পদায়নের জন্য ডিও লেটার ও সুপারিশ করেছেন।  

আরো পড়ুন: শিক্ষকের ‘ঠ্যাং কেটে দেওয়ার’ হুমকি প্রধান শিক্ষকের কক্ষে

রাজধানীর শহীদ মনু মিয়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে টাকা আত্মসাত ও অবৈধভাবে বসবাস করার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় গত ২০ মার্চ তার বেতন একধাপ নীচে নামিয়ে দেওয়া হয়।  

এর আগে, নানা অপকর্মের কারণে বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত হয়েছেন মোসা. রেবেকা। তিনি তেজগাঁও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই পরিবার নিয়ে স্কুলের তিনটি কক্ষে রাত্রিযাপন করেছিলেন। শুধু তাই নয়। স্কুলের কয়েকজন শিক্ষকদের নিয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট স্কুল ক্যাম্পাসে অবৈধ কোচিং, নিয়োগ পরীক্ষার জন্য ভাড়া দেয়াসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছেন বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া ট্রান্সফার সার্টিফিকেট চাওয়া ছাত্রীদের কাছে পুরো বছরের সেশন চার্জ বাবদ এক হাজার পাঁচশ টাকা আদায় করার অভিযোগ রেবেকা সুলতানার বিরুদ্ধে। 

স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক ও অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে তখন জানান, রেবেকার অবৈধ রাত্রিবাসের বিরুদ্ধে দেয়া লিখিত অভিযোগ নিয়ে তারা কথা বলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুকের সঙ্গে। ছাত্রীদের স্কুলে ক্যামেরা হাতে অপরিচিত লোকদের আনাগোনা, স্কুলের ৫ তলা ভবনের ৫ তলার তিনটি কক্ষ স্কুলের খরচে সুসজ্জিতকরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।

এ খবর পেয়ে রেবেকা ব্যাকডেটে মহাপরিচালকের কাছে একটি আবেদন করেন। আবেদনে তিনি স্কুলের দুটি কক্ষে থাকার অনুমতি প্রার্থনা করেন। 

কিন্তু শেষ পর্যন্ত রেবেকাকে স্কুল ক্যাম্পাসেই রাত্রিবাসের অনুমতি দেয়া হয়নি। বাস্তবে তিনি গত কয়েকমাস যাবত স্কুলেই থাকছেন। 

হাবিবুর রহমান নামের একজন অভিভাবক বলেন, মহাপরিচালকও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তা এবং রেবেকাও একই ক্যাডারের। আমরা এ তথ্য জানতে পেরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করি। ঢাকার আঞ্চলিক উপপরিচালক ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি স্কুলেরর শিক্ষক মো. সাখায়েত হোসেন বিশ্বাসকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে সেই তদন্ত প্রতিবেদন শেষ পর্যন্ত অজানা কারণে চাপা পড়ে থাকে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি - dainik shiksha ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা ঢাবিতে ভর্তি আবেদনের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha ঢাবিতে ভর্তি আবেদনের সময় বৃদ্ধি সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ ই-রিকুইজিশনের সংশোধন অপশন চালু - dainik shiksha ই-রিকুইজিশনের সংশোধন অপশন চালু এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উচ্চতর স্কেল পাচ্ছেন ২ হাজার ৯২৩ শিক্ষক - dainik shiksha উচ্চতর স্কেল পাচ্ছেন ২ হাজার ৯২৩ শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045840740203857