মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সরকারি অনুমোদন না নিয়ে একটি দোকান ঘরে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে গড়ে তোলা বিদ্যালয়টি বন্ধ করার দাবি জানিয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সিলেটের চেয়ারম্যান, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। উত্তর কুলাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান এ লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিয়ম বহির্ভূতভাবে স্থানীয় গৌরীশংকর গ্রামে ভৈরবগঞ্জ বাজারে আপ্তার ভিলায় একটি ভবনে দোকান ভাড়া নিয়ে 'রসুলপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়' নামে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মো. মালিক মিয়া, কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান সজল, কুলাউড়া শহরের দন্ত চিকিৎসক ডা. হেমন্ত চন্দ্র পাল, কাতার প্রবাসী আব্দুল মোহিত, প্রবাসী আপ্তার মিয়া ও খলিলুর রহমানসহ স্থানীয় এলাকার বেশ কয়েকজন ব্যক্তি মিলে এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. মাসুক আহমদকে।সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের গৌরীশংকর গ্রামে ভৈরবগঞ্জ বাজারে আপ্তার ভিলায় রসুলপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় নামে একটি স্কুলের প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ওই স্কুলের দেয়ালসহ বিভিন্ন স্থানে ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
অভিযোগকারী উত্তর কুলাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান বলেন, নিয়ম না মেনে মাধ্যমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করায় তা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দোকান ঘরে একটি ভূঁইফোড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
রসুলপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি বদরুজ্জামান সজল ও ডা. হেমন্ত চন্দ্র পাল বলেন, নিয়মনীতি মেনেই স্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্কুল অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে এবং অনলাইন ফিস জমা দেওয়া হয়েছে। দোকানে কিভাবে একটি মাধ্যমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা স্কুল প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছি। পরবর্তীতে বড় পরিসরে ব্যবস্থা করা হবে।
রসুলপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মাসুক আহমদ জানান, তিনি স্কুল প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত নন। অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার বলেন, ওই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ব্যাপারে সরকারি কোনো অনুমোদন নেই। নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হলে সেটি খতিয়ে দেখা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ওই স্কুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।