পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে হামলা ও দোকান ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম মেহেদী হাসান রেইন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবুর অনুসারী।
বুধবার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে দেওয়া এক অভিযোগপত্রে বাচ্চু মিয়া নামে এক দোকানদার রেইনের বিরুদ্ধে তার দোকান ভাঙচুরের অভিযোগ করেন। ওই দোকানদার বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে ফাতেমা স্টোরের মালিক।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ জুন (সোমবার) রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে রেইন একটি মেয়েকে নিয়ে ফাতেমা স্টোরের পাশে থাকা ভাসমান টং দোকানে প্রবেশ করতে চায়। এ সময় সেখানে বসে থাকা কয়েকজন স্থানীয় কাস্টমার রাত হয়ে গেছে বলে মেয়ে নিয়ে টংয়ে না আসার অনুরোধ করেন। এ কথাতে রেইন ক্ষুব্ধ হন এবং কাস্টমারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। এ সময় রেইন দোকানদারকে দোকান কীভাবে রাখেন সেটা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর কিছুক্ষণ পরই তিনি হল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১৫-২০ জন কর্মী নিয়ে ওই টং দোকান ভাঙচুর করেন। তারা দোকানের ক্যারাম বোর্ডের গুটি নিয়ে যান। টংঘর ভাঙচুর করে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা দোকানদার এবং স্থানীয় কাস্টমারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন এবং দোকান কীভাবে চালু রাখে, সেটা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
অভিযোগপত্রে দোকানদার তার নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়েছেন। একই সাথে প্রক্টরের কাছে দোকান ভাঙচুরের বিচার এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান রেইন ঘটনা অস্বীকার করেন। ওই দোকানের সামনে মাদক বিক্রি হয়, তাই পোলাপান নিয়ে ভেঙে দিয়েছেন বলে জানান। মেয়ে নিয়ে সেখানে অনৈতিক কর্মকাণ্ড করেননি বলে দাবি করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর না দিয়ে কেন নিজেরা ভাঙচুর করলেন জানতে চাইলে তিনি উত্তর দিতে পারেননি।
অভিযোগকারী বাচ্চু মিয়া বলেন, ওই ছাত্রলীগ নেতার অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়ায় তিনি আমার দোকান ভাঙচুর করেন। এখন উল্টো আমাকে মাদক বিক্রেতা বানানোর চেষ্টা করছেন। আমি ওখানে গত দশ বছরের মতো ব্যবসা করছি। মাদক বিক্রির সাথে জড়িত থাকলে এতদিন থাকতে পারতাম না। আর পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমার দোকানে আসতো না। নিজে বাঁচতে এখন উল্টো তিনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। ঘটনার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান ছিল। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করে খতিয়ে দেখার জন্য বলবো। সত্যতা মিললে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।